ব্রেন্টফোর্ডের কাছে ৩-১ গোলে হার, এ কোন ইউনাইটেড
ব্রেন্টফোর্ড ৩ : ১ ইউনাইটেড
মাথা নিচু করে বেঞ্চে বসে আছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ রুবেন আমোরিম। একটু পর পরই প্রতিপক্ষ ব্রেন্টফোর্ডের গ্যালারি থেকে ভেসে আসছে উপহাস, ‘কাল সকালেই চাকরি হারাচ্ছ!’ যে উপহাস আমোরিমকে আরেকবার মনে করিয়ে দিল, তার দল কতটা বাজে খেলছে। অসহায় কোচের যেন কিছুই করার নেই। শেষ পর্যন্ত ব্রেন্টফোর্ডের মাঠে ৩-১ গোলে হেরেছে ইউনাইটেড। কিন্তু স্কোর কার্ড যতটা বাজে দেখাচ্ছে, মাঠে ইউনাইটেডের পারফরম্যান্স ছিল তার চেয়েও করুণ!
আবারও সেই বাজে রক্ষণ সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে ব্রুনো ফার্নান্দেজের পেনাল্টি মিস। সব মিলিয়ে এই মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বাজে শুরুটা যেন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। রুবেন আমোরিমের ওপর চাপ বাড়ল কয়েক গুণ, যেকোনো সময় চাকরি হারাতে পারেন পর্তুগিজ এই কোচ। লিগে ছয় ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত ইউনাইটেডের মাত্র দুটি জয়, একটি ড্র, তিনটিতেই হার। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ শুরুর পর এবারই সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে ইউনাইটেড।
এই গ্রীষ্মে দলে আসা নতুন তিন ফুটবলার—ব্রায়ান এমবেউমো, মাতেউস কুনিয়া ও বেনিয়ামিন সেসকোকে আজ একাদশে রেখেছিলেন আমোরিম। কিন্তু মাঠে নেমে তারা যেন দর্শকের ভূমিকাতেই থেকে গেলেন প্রথম কুড়ি মিনিট।
অষ্টম মিনিটে কুনিয়া দাবি করলেন তাঁকে ফাউল করা হয়েছে। কিন্তু রেফারি বাঁশি বাজালেন না। সুযোগ পেয়ে ব্রেন্টফোর্ড পাল্টা আক্রমণে গেল। হ্যারি ম্যাগুয়ারকে কাটিয়ে ইগর থিয়াগো অসাধারণ ভলিতে বল জড়িয়ে দিলেন জালে।
গোলরক্ষক আলতাই বায়িন্দির এরপর দুটো সেভ করলেও ২০ মিনিটে আবারও থিয়াগোর শটে হার মানেন। প্রথম শট ঠেকালেও ফিরতি বলে বল তাঁর হাত ফসকে জালে ঢুকে যায়। ছয় মিনিট পরই অবশ্য সেসকো গোলমুখে ধস্তাধস্তির পর জোরালো শটে ইউনাইটেডের হয়ে নিজের প্রথম গোল করে ব্যবধান কমান।
দ্বিতীয়ার্ধে ড্যাঙ্গো উয়াত্তারা ব্রেন্টফোর্ডের তৃতীয় গোলটাও করতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু বায়িন্দির দারুণ সেভে বাঁচে ইউনাইটেড। অন্য প্রান্তে ৭২ মিনিটে দুর্দান্ত এক সেভ করেন ব্রেন্টফোর্ডের গোলরক্ষক কেলাহার। নাথান কলিন্স ফাউল করেছিলেন তাঁর সাবেক সতীর্থ এমবেউমোকে। লাল কার্ডের হাত থেকে অল্পের জন্য বাঁচলেন তিনি। কিন্তু এর পরেই ব্রুনো ফার্নান্দেজের পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন কেলাহার।
শেষ মুহূর্তে আরও ধাক্কা খায় ইউনাইটেড। যোগ হওয়া সময়ে পাল্টা আক্রমণে ব্রেন্টফোর্ডের মাথিয়াস ইয়েনসেন নিখুঁত ফিনিশিংয়ে করেন দলের তিন নম্বর গোলটা।
ম্যাচ শেষে ইউনাইটেডের খেলোয়াড়েরা মাথা নিচু করে যখন বের হচ্ছেন, ব্রুনো ফার্নান্দেজকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছেন। চোখ ছলছল করছিল। তবে গ্যালারিতে তখন আর ইউনাইটেড সমর্থক নেই বললেই চলে। হতাশায় তারা যে অনেক আগেই বেরিয়ে গেছেন!