২০১৯ সাল থেকে মেসিকে যুক্তরাষ্ট্রে আনার পরিকল্পনা করছিল ইন্টার মায়ামি

আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসিছবি: এএফপি

বিশ্বকাপের পর থেকেই আলোচনায় লিওনেল মেসির দলবদল। পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন নাকি নতুন কোনো গন্তব্যে যাবেন মেসি, এই ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। শুরু থেকেই মেসির ভবিষ্যৎ গন্তব্য হিসেবে শোনা যায় স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা, সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামির নাম। তবে বার্সা ও আল হিলালের নামই শোনা যাচ্ছিল বেশ জোরেশোরে। শেষ পর্যন্ত গত ৮ জুন নাটকীয়তার অবসান ঘটান মেসি নিজেই। ঘোষণা দিয়ে জানান, তাঁর ইন্টার মায়ামিতে যাওয়ার খবর।

ইন্টার মায়ামির সঙ্গে মেসির আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর শুধুই সময়ের ব্যাপার। ৩০ জুন পিএসজির সঙ্গে মেসির আনুষ্ঠানিক চুক্তির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এখন চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৬ জুলাই মেসিকে ইন্টার মায়ামির সমর্থকদের সঙ্গে পরিচয় করে দেবে ক্লাবটি। আর মার্কিন ক্লাবটির জার্সিতে মেসির অভিষেক হবে ২১ জুলাই। মেসির ইন্টার মায়ামিতে যাওয়া নিয়ে বেশ আলোচনা হলেও এ খবর একেবারে অনভিপ্রেতও ছিল না।

আরও পড়ুন

কয়েক বছর ধরেই গুঞ্জন আকারে শোনা গিয়েছিল তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে আগমনের খবর। এবার ইন্টার মায়ামির মালিকদের একজন জর্জ মাসও জানালেন, মেসিকে নিয়ে তাঁদের পুরোনো আগ্রহের কথা। পাশাপাশি মেসির বার্ষিক বেতন কেমন হতে পারে, তা-ও জানালেন মাস। তিনি জানিয়েছেন, মেসিকে তাঁরা বছরে ‘৫০ থেকে ৬০ মিলিয়ন’ পাউন্ড দেবেন। এই অঙ্ক অবশ্য সৌদি ক্লাব আল হিলালের প্রস্তাবিত বেতনের চেয়ে কম। তবে অবসরের পর ক্লাবের মালিকানা পাওয়া, বৈশ্বিক সম্প্রচার থেকে অর্থের ভাগ পাওয়াসহ আরও বেশ কিছু উপায়ে আয়ের সুযোগ থাকছে মেসির।

আরও পড়ুন

এরপর মেসিকে নিয়ে নিজেদের আগ্রহের বিস্তারিত তুলে ধরে মাস আরও বলেছেন, ‘মেসিকে দলে ভেড়াতে আমি সাড়ে তিন বছর তীব্রভাবে কাজ করেছি। মেসির বাবা হোর্হে মেসির সঙ্গে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। মায়ামির মালিকদের একজন ডেভিড বেকহাম লিওর সঙ্গে কথা বলেছে, তবে সে কথা বলেছে শুধু ফুটবল নিয়ে, যেহেতু সে নিজেও একজন ফুটবলার।’

বার্সেলোনায় সতীর্থ ছিলেন মেসি–বুসকেতস। সতীর্থ হবেন ইন্টার মায়ামিতেও
ছবি: টুইটার

মেসিকে দলে ভেড়াতে গিয়ে বার্সা, রোজারিও, দোহা —সব জায়গায় মেসির পেছনে ছুটেছেন জর্জ মাস, ‘২০১৯ সালে যখন মেসি বার্সায় ছিল, তখনই আমরা মেসিকে দলে ভেড়ানোর পরিকল্পনা করি। মে মাসের দিকে মনে হয়েছে কাজটা হয়েছে। আমি তাকে চাপের মধ্যে ফেলতে চাইনি। আমরা বার্সা, মায়ামি, রোজারিও, দোহা সব জায়গায় আলোচনা করেছি। পুরো বিশ্বকাপেই আমি কাতারে ছিলাম, আর্জেন্টিনার খেলা দেখেছি। অ্যাপলের চুক্তিটাও চুক্তি সম্পন্ন করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

তবে ভবিষ্যতে মায়ামিতে আসার বীজটা হয়তো মেসি নিজেই পুঁতেছিলেন। ২০১৮ সালে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ২৫তম ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে ইন্টার মায়ামি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ক্লাবমালিকদের একজন ফুটবল কিংবদন্তি ডেভিড বেকহাম মেসির পাঠানো একটি ভিডিও বার্তা নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন। বেকহামকে নিজের নতুন প্রজেক্টের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে মেসি তাঁর বার্তার সমাপ্তি টানেন এভাবে, ‘কে জানে, কয়েক বছরের মধ্যে তুমি হয়তো আমাকে ফোন করবে।’ কে জানত সেই ভবিষ্যদ্বাণীটা এভাবে সত্যি হয়ে যাবে!