পর্তুগিজ, স্প্যানিশ, ইতালিয়ান ও ইংরেজি—ব্রাজিলের অনুশীলনে চলছে ভাষার চর্চাও

ব্রাজিলের অনুশীলনে কোচ কার্লো আনচেলত্তিব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)

২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিলের প্রস্তুতি তাহলে শুরু হয়ে গেছে!

ভাবছেন, বিশ্বকাপের বাছাইপর্বই তো এখনো শেষ হয়নি। তাহলে প্রস্তুতি কীভাবে শুরু হয়? তা আগামী বছরের বিশ্বকাপে তো ব্রাজিল জায়গা নিশ্চিত করেছে আরও আগেই। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ব্রাজিলের যে দুটি ম্যাচ বাকি আছে, সেগুলো তাই এখন এক অর্থে ব্রাজিলের জন্য বিশ্বকাপেরই প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ। সে লক্ষ্যে রিও ডি জেনিরোর তেরেসোপোলিসে শিষ্যদের নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছেন ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। নামে এটি বাছাইপর্বে দুটি ম্যাচের প্রস্তুতি হলেও তাই আসলে ব্রাজিলের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু হলো এখন থেকে।

আরও পড়ুন

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৫ সেপ্টেম্বর রিও ডি জেনিরোয় বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ছয়টায় চিলির মুখোমুখি হবে আনচেলত্তির দল। মাঝে চার দিন বিরতির পর ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় স্বাগতিক বলিভিয়ার বিপক্ষে বাছাইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচটি খেলবে ব্রাজিল। এ দুটি ম্যাচ সামনে রেখে শুরু করা ব্রাজিল জাতীয় দলের অনুশীলনে ঘটেছে এক মজার কাণ্ড। ফুটবলচর্চার সঙ্গে ব্রাজিলের অনুশীলনে যেন বহু ভাষার চর্চাও হচ্ছে!

ব্রাজিল দলের অনুশীলনে রাফিনিয়া
সিবিএফ

গত ২৬ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাজিল কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশটিতে পা রেখে আনচেলত্তি বলেছিলেন, তিনি খুব দ্রুতই পর্তুগিজ ভাষা শিখবেন। কারণ, ব্রাজিলের প্রধান ভাষা পর্তুগিজ। আনচেলত্তি কতটা পর্তুগিজ ভাষা রপ্ত করতে পেরেছেন, অনুশীলনে সেটাই যেন প্রমাণ হয়ে গেল! ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’ জানিয়েছে, তেরেসোপোলিসের গ্রাঞ্জা কোমারিতে জাতীয় দলের অনুশীলনে স্টাফ ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে পর্তুগিজ ভাষায় কথা বলেছেন আনচেলত্তি। অনুশীলনে খেলোয়াড়দের বিভিন্ন নির্দেশনাও দিয়েছেন পর্তুগিজ ভাষায়।

আরও পড়ুন

আনচেলত্তির ভাষাজ্ঞান কিন্তু এমনিতে বেশ সমৃদ্ধ। ২০১৭ সালে ‘কোচেস ভয়েস’ ওয়েবসাইটে আনচেলত্তিকে নিয়ে একটি লেখায় এই ইতালিয়ান কোচের ভাষাজ্ঞান সমন্ধে জানিয়েছিলেন ব্রাজিল দলে তাঁর-ই সহকারী কোচ পল ক্লেমেন্তে। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার এবং কোচিং ক্যারিয়ারে প্রথম ১৭ বছর ইতালিতেই কেটেছে আনচেলত্তির। ২০০৯ সালে প্রায় ৫০ ছুঁইছুঁই বয়সে আনচেলত্তি চেলসি দায়িত্ব নিয়ে ইংল্যান্ডে যখন এলেন, তখন ইতালিয়ান ছাড়া কোনো ভাষাই তিনি জানতেন না। এরপর ধীরে ধীরে ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষা রপ্ত করেছেন একমাত্র কোচ হিসেবে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগজয়ী কিংবদন্তি। জার্মান ভাষাটাও তাঁর মোটামুটি দখলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোচিং নিয়ে পড়ার সময় কিছুটা রপ্ত করেছিলেন।

চেলসি তারকা হোয়াও পেদ্রোয় (বাঁয়ে) তাকিয়ে ব্রাজিল
সিবিএফ

সে যা–ই হোক, ব্রাজিল দল অনুশীলনের জন্য মাঠে নামার আগে সহকারী কোচেরা খেলোয়াড়দের বলে দিয়েছিলেন, আনচেলত্তির কোনো কথা বুঝতে অসুবিধা হলে তা ভাষান্তর করবেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরো। তবে অনুশীলনের বাইরের কথাবার্তা আর শুধু পর্তুগিজ ভাষায় হয়নি। পর্তুগিজ, স্প্যানিশ, ইতালিয়ান ও ইংরেজি—যখন যাঁর সঙ্গে যে ভাষা প্রয়োজন, সেই ভাষায় কথা বলেছেন আনচেলত্তি।

আরও পড়ুন

আনচেলত্তি মূলত স্প্যানিশ ভাষাতেই কথা বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। যদিও তাঁর সহকারী ক্লেমেন্তের পছন্দের ভাষা ছিল ইংরেজি। কোচদের বহুভাষায় এসব কথাবার্তা সতীর্থদের জন্য ভাষান্তর করে দিয়েছেন জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়েরা।

৬৬ বছর বয়সী এ কোচ ক্লাব ফুটবলে পাঁচটি দেশে কোচিং করিয়েছেন—ইতালি (রেজ্জিনা, পার্মা, জুভেন্টাস, এসি মিলান ও নাপোলি), স্পেন (রিয়াল মাদ্রিদ), ইংল্যান্ড (এভারটন), ফ্রান্স (পিএসজি) ও জার্মানি (বায়ার্ন মিউনিখ)।

ও গ্লোবো আরও জানিয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে পর্তুগিজ ভাষায় সব কথা বলতে পারেন না আনচেলত্তি। পর্তুগিজ শব্দভান্ডারে টান পড়লে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন।