জেল থেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যা বললেন আলভেজ

ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানি আলভেজছবি: এএফপি

গত জানুয়ারিতে ধর্ষণের অভিযোগে স্পেনে গ্রেপ্তার হন দানি আলভেজ। এর পর থেকে জেলেই আছেন ব্রাজিলিয়ান এই ফুটবলার। এর মাঝে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি বাতিল এবং স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদসহ অনেক কিছু ঘটেছে আলভেজের জীবনে। কিন্তু নিজের অবস্থান নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাননি।

অবশেষে আটকের পাঁচ মাস পর ধর্ষণের ঘটনাসহ নানা বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন আলভেজ। স্প্যানিশ সাংবাদিক মায়কা নাভারোকে জেলে বসে এই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আলভেজ। যেখানে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযোগকারী সেই নারীকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেছেন। পাশাপাশি পুরো ঘটনা নিয়ে নিজের স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

আরও পড়ুন

আলভেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৩০ ডিসেম্বর বার্সেলোনার একটি নৈশক্লাবে তিনি এক নারীকে ধর্ষণ করেছেন। এরপর এ ঘটনায় ২০ জানুয়ারি তাঁকে গ্রেপ্তার করে বার্সেলোনা পুলিশ। বর্তমানে ধর্ষণের অভিযোগে আলভেজের বিচারকাজ চলছে। জেল থেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আলভেজ বলেছেন, ‘আমি স্বেচ্ছায় কাউকে আঘাত করিনি, সেই রাতেও করিনি। আমি জানি না সে সজ্ঞানে আছে কি না, রাতে তার ভালো ঘুম হয় কি না। কিন্তু আমি তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছি।’

শুরু থেকেই অবশ্য নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিয়ে একাধিক বক্তব্য দিয়েছে আলভেজ। এবার ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আলভেজ বলেছেন, ‘আমি তার সচেতন ও সজ্ঞানে ফেরার প্রত্যাশা করছি। তবে এমন কোনো রাত নেই যে রাতে আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। একটা রাতও না। আমি খুব ভালোভাবেই সজ্ঞানে আছি।’

দানি আলভেজ ও তাঁর স্ত্রী হোয়ানা সাঞ্জ যখন একসঙ্গে ছিলেন
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আনা রোজা প্রোগ্রামের মায়কাকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে আলভেজ আরও বলেছেন, ‘এটা আমার প্রথম সাক্ষাৎকার। এই সাক্ষাৎকার দিচ্ছি, কারণ আমি কী ভাবছি সেটা সবাইকে জানানোর সুযোগ আমি নিতে চাই। আমি আপনাদের জানাতে চাই সেদিন কী ঘটেছিল এবং বাথরুমে কী হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ভীতিকর এক গল্পই সবাইকে শোনানো হয়েছে এবং আতঙ্কের কথা বলা হয়েছে। যা ঘটেছে তার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি আমি যা করেছি তার সঙ্গেও এর কোনো সম্পর্ক নেই।’

আরও পড়ুন

বাথরুমে কী ঘটেছিল তার ব্যাখ্যায় আলভেজ বলেছেন, ‘আমরা কথা বলার পর আমি বাথরুমে যাওয়ার কথা বলেছিলাম। কারণ, আমরা কিছু সময় একসঙ্গে নেচেছি। আমরা চুমু খাইনি বা তেমন কিছু করিনি। তবে অবশ্যই আমরা একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। আমরা জনসম্মুখে ছিলাম। আমাদের ছবি তোলার ব্যাপারে বাধা দিতে আমার বন্ধু সামনেই দাঁড়িয়েছিল। আমি মেয়েটিকে বলেছিলাম আমি আগে বাথরুমে গিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করব।’

অনেকক্ষণ অপেক্ষায় রাখার পর সেই নারী বাথরুমে এসেছেন দাবি করে আলভেজ আরও যোগ করেন, ‘সে ভেতরে এলে আমি সরে দাঁড়াই। আমি বাথরুমের দরজাও আটকাইনি। জানতাম আমার বন্ধু বাইরে আছে। ফলে কেউ আর ভেতরে আসতে পারবে না। সে জানত আমরা কী করছি। সে কখনোই আমাকে থামতে বলেনি বা চলে যেতে চায় এমন কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। পুরো সময়টাতে দরজা খোলা ছিল। সে চাইলেই চলে যেতে পারত। কারণ, আমি পুরোটা সময় টয়লেটের সিটেই বসেছিলাম।’

আরও পড়ুন

ধর্ষণের ঘটনায় নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি একজনের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন আলভেজ। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী মায়কা আলভেজের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কারও কাছে তিনি ক্ষমা চান কি না। তখন স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে আলভেজ বলেছেন, ‘শুধু একজন মানুষের কাছে আমি চাই সে আমার স্ত্রী, হোয়ানা সাঞ্জ। আমি এরই মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে ক্ষমা চেয়েছি। তবে সবকিছু এখন সবাই জানে। জনসম্মুখে আমার ক্ষমা চাওয়াটাও তার প্রাপ্য।’