২০১৮ সালের কথা। পাউ কুবারসির বয়স তখন ১১। জিরোনা যুবদলের হয়ে একটি ম্যাচ শেষ করে বাবা-মায়ের সঙ্গে গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ তাঁর বাবা-মা তাঁকে কিছু একটা বলতে চাইলেন।
‘দিনটা এখনো আমার চোখের সামনে ভাসে’—দ্য অ্যাথলেটিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠেন কুবারসি, ‘লোরেত দে মার–এ খেলেছিলাম সেদিন। খেলা শেষে গাড়িতে উঠলাম। বাবা–মা একটু ইতস্তত করছিলেন, কীভাবে বলবেন বুঝতে পারছিলেন না। অবশেষে জানালেন—বার্সেলোনা আমার ব্যাপারে আগ্রহী, তারা আমাকে দলে নিতে চায়।’।
‘শুনে আমার খুশি আর উত্তেজনায় চোখে পানি এসে গিয়েছিল। সিট বেল্ট বাঁধা অবস্থাতেই আমি চিৎকার শুরু করে দিলাম, আনন্দে শূন্যে পা ছুড়তে লাগলাম। বাড়ি পৌঁছেই গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে বেরিয়ে দৌড় শুরু করে দিলাম’—ঘটনাটা মনে করে যেন দারুণ আনন্দ পাচ্ছিলেন কুবারসি, ‘বার্সেলোনার ডাক পাব, এটা ভাবতেই পারিনি। জিরোনার হয়ে খেলছিলাম, সেটাই আমার কাছে ছিল বিশাল ব্যাপার। কাতালুনিয়ায় অনেক ভালো ক্লাব আছে—এসপানিওল, জিরোনা। কিন্তু আপনি যদি বার্সার সমর্থক হন, এর চেয়ে বড় স্বপ্ন আর কিছু নেই।’
ঠিক সাত বছর পর। সেই কুবারসি এখন ১৮ বছরের তরুণ। বার্সার মূল দলের সঙ্গে এটি তাঁর তৃতীয় মৌসুম। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তাঁর মূল দলে অভিষেক হয়। এর পর থেকেই তিনি সেন্টার–ব্যাক হিসেবে দলের অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন। অনেকে তাঁকে এই মুহূর্তে ইউরোপের অন্যতম সেরা সেন্টার–ব্যাকও মনে করেন।
এরই মধ্যে স্পেনের হয়ে ৮টি এবং বার্সার হয়ে ৮৯টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন কুবারসি। আজ রোববার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ এল ক্লাসিকো খেলার কথা তাঁর! সেই উপলক্ষে দ্য অ্যাথলেটিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কুবারসি কথা বলেছেন বেশ অকপটে—
কোনটা বেশি কঠিন—বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা, নাকি কিলিয়ান এমবাপ্পেকে সামলানো?
কুবারসি: (হেসে) এমবাপ্পেকে সামলানো। কারণ, আপনি বুঝতেই পারবেন না সে কোন দিক দিয়ে আপনাকে কাটিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইবে, সে সবই করতে পারে। আর পরীক্ষায় তো একটু পড়াশোনা করলেই পাস করা যায়। গত গ্রীষ্মেই আমি পরীক্ষা দিয়েছি, ভালোই করেছি। দর্শনে আমার সবচেয়ে ভালো নম্বর ছিল। কারণ, সেখানে ক্লাসে কী পড়ানো হলো, তার চেয়ে আপনি নিজে কতটা পড়েছেন, তার ওপর বেশি নির্ভর করা যায়। অবশ্য ফুটবলের জন্য আমি কিছু ক্লাস বাদ দিয়েছি।
আমি অবশ্য ইউনিভার্সিটিতে পড়ছি না, বিজনেস ম্যানেজমেন্টের একটি কোর্স করছি, সপ্তাহে দুদিন ক্লাস থাকে। সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে ইংরেজি বা স্প্যানিশে, ঠিক মনে নেই! তবে সব মিলিয়ে ঠিক আছে।
আপনার জন্মস্থান এস্তানিওল। জায়গাটাকে বাইরের কারও কাছে কীভাবে বর্ণনা করবেন?
কুবারসি: গ্রামের মতো একটা জায়গা। চারপাশে প্রকৃতি আর পশুপাখি। ঘরবাড়ি সব পুরোনো ধাঁচের। কোনো পৌরসভা নেই, ফুটবল দল নেই, মাঠও না। খুব শান্ত একটা জায়গা। মনটা ঠান্ডা হয়ে যায়। আমার মধ্যে যে স্থিরতা, সেটা তৈরি করেছে এই জায়গাটাই। আমার ব্যক্তিত্বে, খেলাতেও এই জায়গাটার প্রভাব অনেক। ওখানে গেলে আমার একটাই লক্ষ্য থাকে। পরিবার আর কাছের বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো। অন্য কোনো চিন্তা থাকে না। আমাদের পরিবার বহু প্রজন্ম ধরে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে। আমি মাঝে মাঝে বাবাকে ওয়ার্কশপে সাহায্য করতাম।
আপনার ফুটবলের শুরু তো বাড়ির কাছেই, ভিলাব্লারেইক্সে, তাই না?
কুবারসি: হ্যাঁ, সেটাই ছিল বাড়ির সবচেয়ে কাছের ক্লাব। তখন ফুটবল ছাড়া কিছু ভাবতেই পারতাম না। আট বছর বয়সে জিরোনায় যোগ দিই, তখনই মনে হয়েছিল আমি যেন অনেক দূর এগিয়ে গেছি। মনে আছে, কয়েকটা টুর্নামেন্টে বার্সার বিপক্ষেও খেলেছিলাম। সেটা বিশাল একটা মুহূর্ত ছিল।
সেই টুর্নামেন্টেই লামিনে ইয়ামাল আর মার্ক বের্নাল ছিল। ওরা তখনো দুর্দান্ত। পরে লা মাসিয়ায় যোগ দেওয়ার পর ওদের সঙ্গে আবার দেখা হয়, সেই পুরোনো ম্যাচগুলো নিয়েই গল্প করেছিলাম। প্রথম বছরগুলোয় বার্সা আমার জন্য ট্যাক্সি পাঠাত। সপ্তাহে তিন দিন ওরা আমাকে বাড়ি থেকে তুলে ট্রেনিংয়ে নিয়ে যেত, আবার রেখেও যেত। বার্সার নিজস্ব ট্যাক্সি নেটওয়ার্ক আছে কাতালুনিয়াজুড়ে। স্কুল শেষ হতো বিকেল সাড়ে চারটায়। তারপর দাদা-দাদির বাড়ি গিয়ে ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করতাম। ট্যাক্সিটা পথে অন্য ছেলেদেরও তুলে নিত। ফেরার পথে গাড়িতেই রাতের খাবার খেতাম, বাড়ি পৌঁছাতে প্রায় রাত সাড়ে দশটা। চার বছর এমন চলার পর আমি লা মাসিয়ায় থাকতে শুরু করি।
কাতালুনিয়ার বাচ্চারা তো সাধারণত লা মাসিয়ায় থাকে না, তাই না?
কুবারসি: হ্যাঁ। সাধারণত দূরের শহর বা বাইরের দেশের ছেলেরা ওখানে থাকে। আমি তখন ১৫, কিন্তু খেলছিলাম অনূর্ধ্ব–১৯ দলে। ওই দলে খেলোয়াড়েরা মূলত সকালে অনুশীলন করে। আমার পক্ষে বাড়ি থেকে গিয়ে স্কুল আর অনুশীলন একসঙ্গে সামলানো সম্ভব হচ্ছিল না। তখনই বার্সা বলল, আমি যেন লা মাসিয়ায় গিয়ে থাকি—সকালে অনুশীলন, বিকেলে পড়াশোনা—সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চলবে।
লা মাসিয়ায় শেখার বিশেষত্ব কী?
কুবারসি: ওখানকার কোচেরা ছোট ছোট জিনিস শেখাতে মনোযোগ দেন। আর সেই ছোট জিনিসগুলোই খেলার বড় পার্থক্য তৈরি করে। আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল—পাসটা কেমনভাবে লুকিয়ে দেওয়া যায়। কারণ, প্রতিপক্ষ সব সময় খেয়াল করে তুমি কোথায় পাস দাও, কেমন ভাবে দাও। তাই খেলতে হয় যেন কেউ বুঝে না ফেলে, আবার ঠিক কাজটাও হয়ে যায়। আপনি আপনার শরীরের ভঙ্গিমা দিয়ে এটা লুকানোর চেষ্টা করবেন। যেদিকে পাস দিতে চান, সেদিকে খুব বেশি তাকাবেন না। এতে আপনার সতীর্থ কিছুটা বাড়তি সময় পাবে তার কাজটা করার জন্য। আমি অনুশীলনের পরও থেকে যেতাম, কোচরা যে বিষয়ে বলতেন, সেটা আরও ঝালিয়ে নিতাম। জানতাম, এই ছোটখাটো বিষয়গুলোই আমাকে বড় স্তরে টিকিয়ে রাখবে। অনেকের কাছে এসব তুচ্ছ মনে হয়, কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ে এই খুঁটিনাটিগুলোই পার্থক্য গড়ে দেয়। এই শেখার জন্য আমি সব কোচদের কাছে কৃতজ্ঞ।
এই গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত আপনি তো লা মাসিয়াতেই ছিলেন। এখন আপনার প্রতিদিনের জীবন কেমন?
কুবারসি: এখন বার্সেলোনায় বোনের সঙ্গে থাকি। ওর সঙ্গে থাকলে ফুটবল থেকে কিছুটা দূরে থাকা যায়, মনটাও হালকা হয়। মাঝে মাঝে সিনেমা দেখি, সিরিজ দেখি। তবে সপ্তাহান্তে সময় পেলে প্রিমিয়ার লিগ আর লা লিগার বড় ম্যাচগুলো দেখি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমি খুব একটা যাই না। ফুটবল–দুনিয়ায় সবাই সবকিছু নিয়ে মত দেয়—তুমি কেমন খেললে, কী করছ, কী করছ না—এসব নিয়ে কথা চলতেই থাকে। এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না আমি। আমার কাছে ফোন মানে একটু অবসর সময় কাটানো, যেটা ইচ্ছা দেখি। বোনের সঙ্গে থাকলে একধরনের স্বাধীনতা পাওয়া যায়। ঘরে আরামে সময় কাটানো যায়, আবার পরিবারের সঙ্গও মেলে। অনেক বছর ওর সঙ্গে থাকা হয়নি, খুব কমই দেখা হতো। এখন সেটা পুষিয়ে নিচ্ছি। ফুটবলে সময় যেন উড়ে যায়। কিন্তু পেছনে তাকালে বুঝি—আমি যা কিছু হয়েছি, তার পেছনে পরিবারের অবদান কতটা। ওরা সব সময় আমার যত্ন নিয়েছে, মূল্যবোধ শিখিয়েছে। আজ আমি যেমন মানুষ, তার সবটুকু কৃতিত্ব ওদেরই।
ফুটবল ছাড়া তোমার এমন কোনো আগ্রহ আছে, যেটা মানুষ জানে না?
কুবারসি: ছোটবেলায় বার্সায় আসার পরপরই বাস্কেটবলের প্রতি আগ্রহ জন্মে। এনবিএ খুব ভালো লাগে। রোববার রাতে যখন আমাদের ম্যাচ থাকে না, তখন বাস্কেটবল দেখি—ওগুলো এখানে রাত সাড়ে নটায় শুরু হয়। গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্সের কারণে এনবিএ দেখতে শুরু করেছিলাম। স্টিফেন কারি আর কেভিন ডুরান্ট তখন দারুণ ফর্মে, টানা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছিলেন। এখন অবশ্য মিলওয়াকি বাকসও ভালো লাগে। জিয়ানিস আন্তেতোকুম্পো আমার প্রিয় খেলোয়াড়। নিয়মিত মৌসুম তো এখনই শুরু হলো, চেষ্টা করব পুরো একটা ম্যাচ দেখার। আমাদের দলে কয়েকজন আছে যারা রাত জেগে এনবিএ দেখে... তবে নাম বলব না (হাসি)।
আপনি প্রায়ই বলেন, মাঠে নাকি কোনো চাপ অনুভব করেন না। কিন্তু প্রথমবার বার্সার ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় নিশ্চয়ই কিছুটা চাপ ছিল?
কুবারসি: চাপ নয়, বরং একধরনের লজ্জা ছিল। নতুন মুখ, সবাই চেনে না—ভাবছিলাম, সবাই হয়তো তাকিয়ে আছে, কে আমি তা বুঝতে চাইছে। তাই এক কোণে চুপচাপ বসে থাকতাম, যেন কেউ বিরক্ত না হয়। অপেক্ষা করতাম, কবে মাঠে গিয়ে প্রস্তুতি নিতে পারব। এখন তো দলের অনেকেই আমাদের একাডেমি থেকে উঠে এসেছে। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি, বয়সেও কাছাকাছি। এটা আমাদের মধ্যে একধরনের বন্ধন তৈরি করেছে। আমরা একে অপরকে পরিবারের মতো দেখি। আমার অভিষেকটা হয়েছিল ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে, সালামাঙ্কার মাঠে কোপা দেল রে ম্যাচে। তখনো জানতাম না খেলব কি না। ম্যাচের মাঝপথে হঠাৎ কোচ বলল, ‘গা গরম করো, নামছ।’ ভাবার সময়ই পাইনি, চাপ আছে কি নেই। দ্রুত মোজা পরে দৌড় শুরু করলাম, তারপর মাঠে নামলাম। পরের ম্যাচেই, আমার ১৭তম জন্মদিনের ঠিক আগে, লা লিগায় রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে খেললাম। অসাধারণ একটা মুহূর্ত ছিল সেটা। জাভির কাছে কৃতজ্ঞ—তিনি সুযোগটা দিয়েছিলেন।
এই দুই বছরে কোন খেলোয়াড় আপনাকে সবচেয়ে বেশি বিস্মিত করেছে?
কুবারসি: ইচ্ছা ছিল (লিওনেল) মেসির সঙ্গে খেলার। সেটা তো স্বপ্নের মতো মনে হতো। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে। এখনকার খেলোয়াড়দের মধ্যে পেদ্রির নাম বলব। ওর মতো খেলোয়াড় বিরল।
ড্রেসিংরুমে আপনার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ কে?
কুবারসি: অনেকে আছে, তবে সবচেয়ে কাছের হলো (মার্ক) বের্নাল। আমরা একসঙ্গেই বড় হয়েছি। লামিনে (ইয়ামাল), গাভি... সবাই মিলে আমরা ছোটদের একটা দল।
সবচেয়ে বিরক্তিকর কে?
কুবারসি: (হাসি) কেউ না। আমরা সবাই শান্ত, কিন্তু মজাও করতে জানি।
লামিনে ইয়ামালের বিপক্ষে তো প্রায়ই অনুশীলনে মুখোমুখি হতে হয়। ওর সম্পর্কে এমন কিছু বলুন, যা আমরা জানি না...
কুবারসি: লামিনেকে দেখে আমি অবাক হই না, কারণ ও কী করতে পারে, সেটা আমি জানি। মানুষ এখন যা দেখছে, ওর ভেতরে এখনো তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু আছে। সামনে সবাই আরও অবাক হবে। ছোটবেলা থেকেই ওকে দেখে মনে হতো, এই ছেলেটা যদি ঠিক পথে চলে, একদিন একেবারে শীর্ষে যাবে। ওর এই যাত্রাটা আমি কাছ থেকে দেখেছি। একসঙ্গে অনুশীলন করেছি, একসঙ্গে মূল দলে এসেছি। ওর সাফল্যে আমি সত্যি খুশি।
এখন লা মাসিয়ায় এমন কোনো তরুণ আছে, যার দিকে আমরা নজর রাখতে পারি?
কুবারসি: আমার বয়সী কিছু খেলোয়াড় আছে, যারা এখন বার্সা আতলেতিক বা অনূর্ধ্ব–১৯ দলে খেলছে। কিম জুনিয়েন্ট, হুয়ান হারনান্দেস, দানি আবিলা। ওদের দিকে চোখ রাখতেই হবে।
কার্লেস পুয়োলকে আপনি আদর্শ মনে করেন। তাহলে কি নিজেকে বার্সেলোনার ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে দেখেন?
কুবারসি: হ্যাঁ, আমি তাই ভাবি। বয়সভিত্তিক দলে আমি কখনো কখনো অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছি। এখন নিজের খেলা আর আচরণ দুটোই আরও উন্নত করতে চাই। নেতৃত্ব মানে শুধু কথা বলা নয়, কাজ করে দেখিয়ে দেওয়াও। সমর্থকদের খুশি করা আমাদের লক্ষ্য। আমি চেষ্টা করব সবটুকু দিতে।
রোববার বার্নাব্যুতে এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুসের মুখোমুখি হবেন। এটা কি ভয়ের কিছু?
কুবারসি: গত মৌসুমে আমরা রিয়ালকে চারবার হারিয়েছি। তাই আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তবে এবার রিয়াল মাদ্রিদ প্রতিশোধ চাইবে। নতুন ম্যাচ—নতুন চ্যালেঞ্জ। আমাদের কাজ আগের মতোই নিজেকে ধরে রাখা। ভয় নিয়ে না, সতর্ক হয়ে খেলতে হবে।
এমবাপ্পের বিপক্ষে খেলতে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হয়?
কুবারসি: প্রথম কথা, চোখ খোলা রাখতে হবে, সবকিছুতে মনোযোগী থাকতে হবে। এমবাপ্পের ব্যাপারে কিছুই অনুমান করা যায় না। কখন, কোথা থেকে আক্রমণ হবে, বলা যায় না। সে কোন দিক দিয়ে ড্রিবল করে আপনাকে কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে, বুঝতেই পারবেন না। সে সবকিছু করতে পারে।
বার্নাব্যুর পরিবেশ কি আলাদা চাপ তৈরি করে?
কুবারসি: এল ক্লাসিকো বিশ্বের অন্যতম বড় ম্যাচ। সবাই চোখ রাখে এই ম্যাচে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, তবে তারপরও আমি চাপ অনুভব করি না। বার্নাব্যুতে একটা অন্য রকম পরিবেশ থাকে, তবে সেখানে খেলাটাও বেশ উপভোগ্য।
বার্সার চারপাশের শোরগোল সব সময়ই থাকে। এত শব্দ, আলোচনা, সমালোচনা—এর সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়া যায় কি?
কুবারসি: আমার মনে হয় না মানুষ এতে অভ্যস্ত হয়, কিন্তু সবাই শিখে নেয় কীভাবে বাঁচতে হয়। এটা বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ক্লাব। আলাপ-আলোচনার কেন্দ্রে থাকাই স্বাভাবিক।
আগামী গ্রীষ্মে বিশ্বকাপ। কোনো স্বপ্ন আছে?
কুবারসি: সব খেলোয়াড়ই স্বপ্ন দেখে সবচেয়ে বড় ট্রফিগুলো জেতার—ক্লাবের পক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ, জাতীয় দলে ইউরো কিংবা বিশ্বকাপ। এগুলো বিশাল ব্যাপার।
খুব কম খেলোয়াড়েরই সেই সৌভাগ্য হয়। আশা করি, আমি সুযোগ পাব। বিশ্বকাপ খেলব, আপাতত এটাই লক্ষ্য।