রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের আক্রমণাত্মক হওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে ট্রাম্পের ইঙ্গিত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায়, ১৫ আগস্ট ২০২৫ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের আক্রমণাত্মক হওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনার গতি মন্থর হয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্পের এমন ইঙ্গিতকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিজের ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘একেবারে অসম্ভব না হলেও আক্রমণকারী কোনো দেশের ভেতর পাল্টা আক্রমণ না চালিয়ে যুদ্ধে জেতাটা খুবই কঠিন। বিষয়টা অনেকটা এমন—খেলায় দুর্দান্ত রক্ষণভাগ থাকা দারুণ একটি দলকে আক্রমণ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাহলে জেতার কোনো সুযোগই থাকে না!  ইউক্রেন আর রাশিয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টা এমনই।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, ‘কুটিল ও চরম অযোগ্য জো বাইডেন ইউক্রেনকে পাল্টা আক্রমণ করতে দেননি। শুধু আত্মরক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এর ফল কী হলো? যাহোক, আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে কখনোই এ যুদ্ধ হতো না—কোনো সুযোগই ছিল না। সামনে রোমঞ্চকর সময় আসছে!’

ট্রাম্পের এমন মন্তব্য মস্কোকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। কারণ, রুশ ভূখণ্ডে ইউক্রেনের বাহিনীর আক্রমণের বিষয়ে যেকোনো সমর্থনকে রাশিয়া ‘চূড়ান্ত সীমালঙ্ঘন’ বলে বিবেচনা করে।

আরও পড়ুন

বাইডেনের আমলে মার্কিন প্রশাসনের দীর্ঘদিনের নীতি ছিল, রাশিয়ার ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারবে না ইউক্রেন। তবে গত বছরের নভেম্বরে মিত্রদের চাপের মুখে নীতিতে পরিবর্তন আনা হয়।

এরপর রাশিয়া নিজেদের পারমাণবিক নীতিমালা হালনাগাদ করে। জানানো হয়, পারমাণবিক শক্তিধর কোনো দেশের সহায়তায় কেউ রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালালে সেটাকে যৌথ হামলা বলে বিবেচনা করা হবে।

আরও পড়ুন

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গত ১৫ আগস্ট আলাস্কায় বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর ট্রাম্প গত ১৯ আগস্ট ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে। একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক হয় ইউরোপীয় নেতাদেরও। তবে পুতিন–জেলেনস্কির মধ্যে একটি শীর্ষ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসার সম্ভাবনা এখনো অধরা রয়ে গেছে। পুতিন এখনো এতে রাজি হননি। 

রুশ বাহিনী গত বুধবার রাতেও ইউক্রেনে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন একটি উৎপাদন সংস্থাকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। সেখানে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন

ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট দিয়ে এমন মন্তব্য করার কিছুক্ষণ পর ট্রাম্প একটি ছবি পোস্ট করেন। ছবিতে তাঁর সঙ্গে পুতিনকে দেখা যাচ্ছে। দুই নেতার ঠিক পেছনে দেয়ালে ঝুলছে ১৯৫৯ সালে তোলা একটি ছবি। ওই ছবিতে তৎকালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী নিকিতা ক্রুশ্চেভ রয়েছেন। ছবিটি তখনকার সময়ে সোভিয়েত যুগের চাপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থানের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।

আরও পড়ুন