দোকানে ঘুরে, কেএফসিতে খেয়ে সময় কাটছে বলসোনারোর
ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাস করছেন। ব্রাজিল ছাড়ার পর অনেকটাই নিভৃতে সাধারণ মানুষের জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। তাঁর জন্য সেখানে নেই কোনো প্রটোকল, বিশাল আয়োজন। নেই ব্যস্ততাও। একেবারে সাধারণ মানুষের মতো দোকানে দোকানে ঘুরে সময় কাটছে বলসোনারোর। তাঁকে একাকি কেএফসির একটি শাখায় খেতেও দেখা গেছে।
গত ১ জানুয়ারি ব্রাজিলে ক্ষমতায় বসেন বামপন্থী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। লুলার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগেই দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন বলসোনারো। তাঁর অভিযোগ, নির্বাচনে হারেননি তিনি। ভোটের লড়াইয়ে লুলা তাঁর বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন। তাই লুলার শপথের ৪৮ ঘণ্টা আগে দেশ ছাড়েন তিনি। সেই থেকে ফ্লোরিডায় রয়েছেন বলসোনারো। যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে ছয় মাসের পর্যটন ভিসার আবেদন করেছেন।
এর মধ্যেই গত ৮ জানুয়ারি জইর বলসোনারোর হাজারো সমর্থক ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, পার্লামেন্ট ভবননহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনে হামলা চালান। এ নিয়ে ব্রাজিলে বলসোনারোর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গত মঙ্গলবার ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ব্রাজিলিয়ান সংগঠন ‘ইয়েস ব্রাজিল ইউএসএ’ আয়োজিত এক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন বলসোনারো। সেখানে প্রায় ৪০০ সমর্থকের সামনে তিনি আবারও নির্বাচনে ফল নিয়ে নিজের সন্দেহের কথা বলেন। তবে আপাতত দেশ ছাড়লেও রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
৬৭ বছর বয়সী বলসোনারো ব্রাজিল ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়ার পর থেকে নিজেকে অনেকটাই চোখের আড়ালে রেখেছিলেন। এর মাঝে তাঁকে একবার একা কেএফসিতে খেতে দেখা গেছে। পেটের ব্যথা নিয়ে তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন।
প্রবাস জীবনের শুরুর দিকে বলসোনারো বসবাস করছিলেন ফ্লোরিডার ডিজনি ওয়ার্ল্ড রিসোর্টের পাশে ছোট একটি এলাকায়। পরবর্তীতে আবাস বদলে ফেলেন তিনি। বর্তমানে তিনি ওরল্যান্ডোয় ব্রাজিলের সাবেক মার্শাল আর্ট চ্যাস্পিয়ন জোসে আলদোর বাড়িতে আছেন। সেখানকার একাধিক দোকানে তাঁকে একা একা ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। একা একা বসে খেতে দেখা গেছে কেএফসিতে।
বলসোনারোর সামনে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। একদিকে তিনি দেশে ফেরার কথা প্রকাশ্যে বলছেন, অন্যদিকে আবার ছয় মাসের ভিসার জন্য মার্কিন প্রশাসনের কাছে আবেদনও করেছেন। দেশে ফিরলে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাঁর। তবে দেশে ফেরার দিন–তারিখ এখনো চূড়ান্ত করেননি বলসোনারো। তাঁর ছেলে ফ্লাভিও বলসোনারো বলেন, তাঁর বাবা দেশে ফিরতে চান। সেটা আগামীকাল হতে পারে, আবার ছয় মাস পরও হতে পারে।