Thank you for trying Sticky AMP!!

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ঝর্না রহমান

সাহিত্যিক ঝর্না রহমানের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা

‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৭’ পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান। বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন লেখক ও নির্মাতা ফরিদুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাহিত্যিক মোজাফ্‌ফর হোসেন।

প্রধান অতিথি সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ঝর্না রহমান বাস্তববাদী লেখা লেখেন। নিম্নবর্গের মানুষকে নিয়ে তাঁর লেখায় গভীর সমবেদনা আছে। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে যা দেখেছেন, তা নিষ্ঠার সঙ্গে, সততার সঙ্গে লিখেছেন। তাঁর গল্প-উপন্যাসে কোনো সাজানো চরিত্র নেই, সব জীবনঘনিষ্ঠ।
ফরিদুর রহমান বলেন, চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে ত্রসরেণু (ছিদ্রপথে আসা আলোকরশ্মির মধ্যে যে ধূলিকণা উড়তে দেখা যায়)। ত্রসরেণু দেখার ক্ষমতা সবার নেই। ঝর্না রহমান সেই ত্রসরেণু সাফল্যের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করে তাঁর কাজ করে চলেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে তাসমিমা হোসেন বলেন, বাংলার মানুষের কথা ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছে সাধারণ নারীরা। ঝর্না রহমানের লেখায় সাধারণের কথা সাবলীলভাবে উঠে আসে। ঝর্না রহমানের মতো অসংখ্য গুণী মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে।
পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ঝর্না রহমান বলেন, কোনো লেখক পুরস্কারের জন্য নয়, নিজের ভেতরের তাড়না ও বোধ থেকে দেশ ও মানুষের জন্য লেখেন। তবে পুরস্কার অবশ্যই অনুপ্রেরণা জোগায়। তিনি ভাষাশহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘তাঁদের জন্যই বাংলা ভাষায় লিখতে পারছি, এই মাটিতে কর্মময় পদক্ষেপ রাখতে পারছি।’

ঝর্না রহমানের জন্ম ১৯৫৯ সালে। আশির দশক থেকে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক, কবিতা, ছড়া, ভ্রমণ, শিশুসাহিত্য লিখছেন তিনি। এ পর্যন্ত তাঁর ৬০টির মতো বই প্রকাশ হয়েছে তাঁর। ঝর্না রহমানের উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ হলো ‘ঘুম-মাছ ও একটুকরো নারী’, ‘অগ্নিতা’, ‘স্বর্ণতরবারি’, ‘কৃষ্ণপক্ষের ঊষা’, ‘পেরেক’, ‘জাদুবাস্তবতার দুই সখী’। উপন্যাস ‘পিতলের চাঁদ’, ‘ভাঙতে থাকা ভূগোল’। কাব্যগ্রন্থ ‘জল ও গোলাপের ছোবল’, ‘হরিৎ রেহেলে হৃদয়’, ‘চন্দ্রদহন’, ‘উড়ন্ত ভায়োলিন’ (নাট্যকাব্য) এবং কিশোর উপন্যাস ‘আদৃতার পতাকা’, ‘হাতিমা ও টুনটুনি’ ইত্যাদি।

বক্তব্য দেন সাহিত্যিক ঝর্না রহমান

অনুষ্ঠানে একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ঝর্না রহমানের সাহিত্যকর্ম তুলে ধরা হয়। ওই তথ্যচিত্রে ঝর্না রহমানকে নিয়ে কথা বলেন কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, কথাসাহিত্যিক জাহানারা নওশীন, সাহিত্যিক-রাজনীতিক নূহ-উল-আলম লেনিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কবিতা আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পাক্ষিক অনন্যা আয়োজিত প্রবন্ধ, আবৃত্তি ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১২ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। গারো সম্প্রদায়ের পাঁচ কিশোরীর গানের দল এফ মাইনরের গান দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। প্রতিবছর একজন করে এ পর্যন্ত ২৬ জন নারী সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।