
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটে দুই যুগ ধরে আতর–টুপি বিক্রি করছেন মফিজুল ইসলাম। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর বেচাবিক্রি তেমন হয়নি। সে কথাই বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি, ‘আমরা যারা টুপি, আতর বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি, তাদের জন্য গত দুটি বছর খুব খারাপ গেছে। করোনার কারণে ঈদের আগে বেচাকেনা ছিল একেবারেই কম। বায়তুল মোকাররমের অনেকে পুঁজি হারিয়ে ব্যবসা ছেড়ে চলে গেছে। তবে এবার বেচাকেনা ভালো।’
গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত বায়তুল মোকাররম মার্কেটের আতর-টুপির দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের বেশ আনাগোনা। ছোট ছোট দোকানে একটার পর একটা সাজানো বাহারি সব টুপি। ১৩ বছরের কিশোর ছেলে আমান উল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল দুপুরে বায়তুল মোকাররমে টুপি কিনতে আসেন মুগদা এলাকার বাসিন্দা আতাউল ইসলাম। প্রথম আলোকে বললেন, ‘জামা-কাপড়সহ অন্যান্য কেনাকাটা শেষ। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নতুন টুপি, আতর ও জায়নামাজ কিনেছি।’ আর আতাউলের ছেলে আমান উল্লাহ বলল, ‘নতুন টুপি, পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে ঈদের নামাজ পড়তে যাব।’
আতর-টুপির জন্য নামকরা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মার্কেট। আতর-টুপির কয়েকটি দোকান ঘুরে জানা গেল, সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা দামের যে টুপি, তা পরিচিত পেশোয়ারি টুপি নামে। এসব দোকানে আরও আছে সুলতান সোলেমানি টুপি, দাম ২ হাজার ৫০০ টাকা; রুমি টুপি ২ হাজার টাকা, ওমানি টুপি ১ হাজার ২০০ টাকা, মিসরীয় টুপি ১ হাজার টাকা, মুম্বাই টুপি ৭০০ টাকা, পাকিস্তানি সিন্ধি টুপি ১ হাজার টাকা, পাকিস্তানি আলকব টুপি ৫০০ টাকা ও আফগানি টুপির দাম ৫০০ টাকা।
টুপি বিক্রেতাদের ভাষ্য, দামি টুপির ক্রেতা কম। তবে ঈদের আগে দামি টুপির চাহিদা কিছুটা বেড়ে যায়। বেচাকেনা বেশি দেশি কারখানায় তৈরি করা টুপির। ঈদের আগে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে আল-ফারুকের টুপি, ফিরোজের টুপি, দেশি জালি টুপি প্রভৃতি।
বায়তুল মোকাররম মার্কেটের যে আতরের দোকানগুলো রয়েছে, সেখানে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার (এক তোলা) টাকা দামের আতর রয়েছে, তার নাম উদ আতর (সৌদি আরব)। এ ছাড়া দামি আতরের মধ্যে আছে আল হারমাইন শেখ (এক তোলা ২০ হাজার টাকা), কস্তুরি (এক তোলা ১৪ হাজার টাকা) ও মুস্তাহ আল তাহারা (এক তোলা সাড়ে ৪ হাজার টাকা)। তবে আতরের দোকানগুলোয় বেশি বিক্রি হচ্ছে আলিফ, আল ফারহান, আল ইসরাত, আল রিসাব, জান্নাতুল ফেরদাউস, রজনীগন্ধা, বকুল, সুরভি ও বেলি ফুলের আতর।
মীম ক্যাপ আতর হাউসের মালিক ফরহাদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা টুপি কিনছেন, তাঁদের কেউ কেউ আতরও কিনছেন। সব মিলিয়ে ঈদের আগে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।