>• উয়ারী-বটেশ্বর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন জনপদ।
• শনিবার জাদুঘরের উদ্বোধন হয়।
• উৎখননের মাধ্যমে পাওয়া গেছে অনেক দুর্লভ নিদর্শন।

আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন প্রত্নস্থান নরসিংদীর উয়ারী-বটেশ্বর। এ পর্যন্ত ৫০টি প্রত্নস্থান উৎখননের পর মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছে। এই নিদর্শনগুলো দেখার সুযোগ করে দিতে স্থাপন করা হয়েছে উয়ারী-বটেশ্বর দুর্গনগর উন্মুক্ত জাদুঘর।
গতকাল শনিবার দুপুরে বেলাবর আমলাবতে জাদুঘরের উদ্বোধন করেন লেখক ও প্রত্নতত্ত্ববিদ মুহাম্মদ হাবিবুল্লা পাঠান। এই সময় প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাকেন্দ্র ঐতিহ্য অন্বেষণের নির্বাহী পরিচালক ও উয়ারী-বটেশ্বর খননকাজের দলনেতা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ও আমলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির আহম্মেদসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মুহাম্মদ হাবিবুল্লা পাঠান বলেন, এখানে উৎখননের মাধ্যমে পাওয়া গেছে অনেক দুর্লভ নিদর্শন। খনন করা জায়গা তো অনেক প্রাচীন। তাই সংরক্ষণের স্থায়ী ব্যবস্থা ছাড়া খোলা রাখা যায় না। সে জন্য দর্শনার্থীরা এসে এগুলো দেখতে পান না। এখানকার আবিষ্কৃত প্রত্নস্থাপনা ও প্রত্নসম্পদের ব্যাখ্যাসহ ছবি এবং তার উন্মুক্ত জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে এলে লোকজন উয়ারী-বটেশ্বরের গুরুত্ব কতখানি তার ধারণা পাবেন।
ঐতিহ্য অন্বেষণসূত্রে জানা গেছে, উয়ারী-বটেশ্বর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন জনপদ, রাজধানী ও একটি দুর্গনগর। ২০০০ সাল থেকে উৎখনন কাজ শুরু হয়ে এ পর্যন্ত ৫০টি প্রত্নস্থান থেকে তাৎপর্যপূর্ণ প্রত্নবস্তু আবিষ্কৃত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা, উত্তরাঞ্চলীয় কালো মসৃণ মৃৎপাত্র, রোলেটেড মৃৎপাত্র, নবযুক্ত মৃৎপাত্র, ধাতব নিদর্শন, স্বল্প মূল্যবান পাথর ও কাচের পুঁতি, পোড়ামাটি ও পাথরের শিল্পবস্তু, বাটখারা ইত্যাদি। চুন-সুরকি নির্মিত রাস্তা, বৌদ্ধ পদ্ম মন্দির, বৌদ্ধমন্দির ও বৌদ্ধবিহারের পাশাপাশি ইটনির্মিত বিশেষ স্থাপত্য বৌদ্ধ কুণ্ড (কূপ) বা পুকুনিয়া (পুকুর) আবিষ্কৃত হয়েছে। পর্যটকদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সোয়া ১ বিঘা জমিতে স্থায়ীভাবে উয়ারী-বটেশ্বর দুর্গনগর উন্মুক্ত জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্বেষণ।
জানতে সুফি মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের প্রত্ন জাদুঘর বাংলাদেশে এটাই প্রথম। এই জাদুঘরে প্রত্নবস্তুর মডেল, রেপ্লিকা, প্রত্নবস্তু, প্রত্নবস্তুর আলোকচিত্র, বিবরণ, বিশ্লেষণ প্রদর্শন করা হয়েছে।
উদ্বোধন শেষে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে দীর্ঘস্থায়ী ঐহিত্য পোস্টার বিতরণ করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য প্রতি ঘণ্টায় দেখানো হচ্ছে উয়ারী-বটেশ্বর নিয়ে নির্মিত বিভিন্ন প্রামাণ্যচিত্র।