করোনায় বেকারত্ব ও সমাধান

করোনার কারণে চাকরি হারাবে অনেকেই। ছবি: বিবিসি
করোনার কারণে চাকরি হারাবে অনেকেই। ছবি: বিবিসি

সারা বিশ্বেই বেকারত্ব বাড়ছে। করোনা সংকট মোকাবিলায় অনেক প্রতিষ্ঠানই কর্মী ছাঁটাইয়ের চিন্তায় আছে। এতে করে বেতন দিতে হবে কম। ক্ষতি কিছুটা পোষাবে। বা ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে ফ্লো-তে আসতে টুকটাক সময় লাগবে, তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত।

খোদ আইএমএফ বলছে, চাকরি হারানো মানুষের সংখ্যা কম হবে না। সারা বিশ্বেই যখন এই সমস্যা হবে, তখন বাদ যাবে না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালির মতো বড় বড় দেশ। তা ছাড়া, এখন পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ এই দেশগুলোতেই বেশি।

আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫ থেকে শুরু করে ১০% এর ওপরে মানুষ চাকরি হারাবে এই সময়ে। বর্তমান এই সময়ে ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশ গ্রিসে চাকরি হারানোর শতাংশ আর না বলি। ছবিতে দেখে নিয়েন।

যেখানে ইউরোপ, আমেরিকা এই সংকটে, সেখানে এশীয় দেশগুলো আর কীভাবে বাদ যাবে! এশিয়াতেও এই সংকট দেখা যাবে। মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যে অনেক বাংলাদেশি ভাইয়েরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। মালদ্বীপে একই সমস্যা। ইউরোপেও অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা ইতিমধ্যে কর্মহীন।

বিদেশে সংকট যতটা মানা যায়, তার থেকেও বড় সমস্যা দেশে। আজ দেখলাম, একটা প্রতিষ্ঠান অনেককে ছাঁটাই করেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান লিস্ট করছে ছাঁটাই করতে। বিশেষ করে, যারা এই সংকটে অবদান রাখতে পারছে না অনলাইনে, প্রযুক্তি মাধ্যমে তাদের ছাঁটাই করা হবে। সমালোচনার মুখে পড়তে কেউ এখন না করলেও পরে করতে পারে এমন ধারণাও হচ্ছে।

অথচ, একই সময় ভিন্ন ও ভালো খবর দিচ্ছে গুগল। প্রতিষ্ঠানটির সিইও বলছে, যেহেতু এই সময়ে বেশ ভালোই ক্ষতি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির, এটি কাটিয়ে উঠতে আমরা তাই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বছরের শেষ দিকে নতুন অনেককেই নিয়োগ দেওয়া হবে।

স্ট্যাটিসা ডটকমের ৫ ফেব্রুয়ারির এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গুগল প্রতিবছরই ক্রমবর্ধমান হারে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। এর মাঝে এক বছর তুলনামূলক বেশিই নিয়োগ দিয়েছে।

এটা সত্য, গুগলের ব্যাপ্তি ও পরিসরের সঙ্গে অন্য প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে লাভ নাই। তাই, আমরা অমন ভাবতেও পারব না। একই সাথে, এও সত্য, ১০ জন মানুষের কাজ, উৎপাদন, সরবরাহ ৫-৭ জন দিয়ে হবে না। তাই ছাঁটাই কোনো সমাধান হতে পারে না। তা ছাড়া, হুট করে চাকরি চলে যাওয়ার ক্ষতি ওই ব্যক্তি পরিসরে তা উপরস্থ থেকে দেখলে হয়তো বোঝার কথা না। তাই অনেকে বুঝেও না।

মানবিক বিবেচনায় চাকরি না যেতে পারে। আমি বলব তাও, কেবল মানবিক দিক নয় বরং এ ক্ষেত্রে কৌশল ভিন্ন হতে পারে। ধরা যাক, একজন কর্মীর বেতন ২০ হাজার টাকা। তার বেতন ১৮ হাজার করা যেতে পারে। এতে তার ক্ষতি হলেও চাকরি চলে গিয়ে বেকার থাকা থেকে কিছুটা হলেও ভালো।

মানে একটা কৌশল এমন হলো, ২০ হাজার তদূর্ধ্ব বেতনে ৫-৭% কাটা হবে। বা, ওপরের হিসেবে ১০%। এর নিচের আয়ের মানুষের কমবে না। যদি কারও বেতন লাখের ওপরে থাকে, সে ক্ষেত্রে রেশিও কমতে পারে কিছুটা। ১০ লাখ বেতন হলে তো ১০%-এ ১ লাখ হয়ে যায়। তার খরচের হিসাবে ১ লাখ না থাকা আবার বিশাল ক্ষতি।

এমনই হবে, ব্যাপারটা তা না। তবে, অর্থনীতিবিদরা এ নিয়ে কোনো নির্দেশনা, গবেষণা, নীতিমালা দিতে পারে। সরকারি বিধিমালাও থাকতে পারে। নয়তো কেউ হয়তো ছাঁটাই করবে না। কেউ আবার এই সুযোগটা ছাড়বে না।

*লেখক: হেড অব ডটকম, ড্রিম ডিভাইজার

আরও পড়ুন
করোনার কারণে আড়াই কোটি মানুষ চাকরি হারাতে পারেন: আইএলও