নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুনের ঘটনায় মারা গেলেন ৫২ জন শ্রমিক। সাম্প্রতিক অগ্নিদুর্ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, দাহ্য পদার্থ ও রাসায়নিকের কারণে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। আবার দুর্ঘটনার পর বেরিয়ে আসছে অবহেলা ও অনিয়মের চিত্র। এই পরিপ্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সক্ষমতা, বিস্ফোরক পরিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের দায়দায়িত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম।

প্রথম আলো: নারায়ণগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুন নেভাতে এত সময় কেন লাগল? কারখানার ভেতরের ব্যবস্থাপনা, নাকি ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতার ঘাটতি?
শাহিদউল্লাহ: ফায়ার সার্ভিস দ্রুততম সময়েই কাজ শুরু করেছিল। আগুন নেভানোর দুটো ধাপ—নিয়ন্ত্রণ ও নেভানো। নিয়ন্ত্রণ যত আগে করা যায়, প্রাণহানি তত কমানো সম্ভব। আগুন নেভাতে কত সময় লাগবে, তা অনেকটা নির্ভর করে ভেতরে কী পরিমাণ দাহ্য পদার্থ আছে, তার ওপর। যেমন পাটের গুদামে আগুন লাগলে তা কয়েক দিন ধরে জ্বলতে থাকে। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, ঘটনাস্থলে যদি দাহ্য পদার্থ বেশি থাকে, তাহলে বাইরের দিকে আগুন নিভে গেলেও ভেতরে-ভেতরে থেকে যায়। সেখান থেকে আবার আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাটের গুদামে আগুন লাগলে প্রয়োজনে পাশের ভবনের দেয়াল ভেঙে পাটগুলো সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হয়। হাসেম ফুডসের ঘটনাতেও দেখুন, এক তলার গুদামে প্রচুর অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, কাগজ বা মোড়কজাতকরণের উপকরণ মজুত ছিল। এমন হতে পারে যে ফায়ার সার্ভিস মনে করেছে আগুন নিভে গেছে, আসলে ভেতরে-ভেতরে জ্বলছে। এমন কয়েকবার হতে পারে। সব মিলিয়ে পুরোপুরি নেভাতে সময় লেগেছে। তবে নিয়ন্ত্রণ কিন্তু আগেই হয়েছে।
আগুনের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কারখানা কর্তৃপক্ষের করণীয় কিছু আছে কি?
শাহিদউল্লাহ: রাজধানীর বাইরে আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি অনেক সময় নির্ভর করে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের দূরত্বের ওপর। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। এ সময়ের মধ্যে কী হবে? এর উত্তর হলো, কারখানা কর্তৃপক্ষের নিজেদেরই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সেটা শুধু মানবিক নয়, আইনি বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। আইনে বলা আছে, প্রাথমিকভাবে দক্ষতার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কারখানায় থাকতে হবে। যখনই কোনো কারখানায় কর্মচারীর সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হবে, বাধ্যতামূলকভাবে তাদের সেফটি (নিরাপত্তা) কমিটি থাকতে হবে। শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমিটির আকার ও দক্ষতা বাড়াতে হবে। এ বিষয়গুলো শ্রম আইনে খুব ভালোভাবে উল্লেখ করা আছে। সেফটি কমিটির সদস্যদের অর্ধেক হবেন কারখানা মালিকপক্ষের প্রতিনিধি, বাকি অর্ধেক শ্রমিকপক্ষে। কমিটির কাজ হচ্ছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আগুন নেভানো ও উদ্ধারের জন্য কারখানার প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৬ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আগুন নেভানোর কর্মী, ৬ জন উদ্ধারকর্মী এবং ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দাতা হিসেবে তৈরি করতে হবে। প্রতিটি কারখানায় অগ্নি নির্বাপণকর্মীদের দায়িত্ব হলো প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করা। কারখানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো কারখানার ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা। ঝুঁকির ওপর নির্ভর করবে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুতি কী হতে পারে।
হাসেম ফুডসের কারখানায় দাহ্য পদার্থ ছিল। সাম্প্রতিক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দাহ্য ও অতিদাহ্য রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কি এসব রাসায়নিকের আগুন নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা তৈরি হয়েছে?
শাহিদউল্লাহ: হাসেম ফুডস একটি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উৎপাদনকারী কারখানা। এই কারখানায় প্রচুর দাহ্য তরল ছিল। ভোজ্যতেল ও ডালডা সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়েছে। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ধরনের ফোম প্রয়োজন, যা ফায়ার সার্ভিসের কাছে আছে। ২০১০ সালে নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের সময় তা ছিল না। আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের এখন বিশেষ অগ্নিনির্বাপণ যানও আছে। তবে সীমাবদ্ধতা হলো, এই যান সব জায়গায় পাঠানো সম্ভব হয় না। কারণ, রাস্তা সরু থাকে। আগুন লাগলে আগে দেখতে হয় সেখানে কোন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে, তা বুঝে ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও অগ্নিনির্বাপণ যান পাঠানো হয়।
বেশির ভাগ শিল্পকারখানা ঢাকা মহানগরের বাইরে অবস্থিত। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং আধুনিক ও উন্নত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলোর অধিকাংশ থাকে রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয়ে।
শাহিদউল্লাহ: কয়েক বছর আগে আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় আগুন লাগার পর ঢাকা থেকে সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগেছিল। তখন থেকেই ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হচ্ছিল। কথা হচ্ছে, আমরা রাজধানীকে বেশি সুরক্ষা দেব, না গাজীপুরের একটি কারখানাকে? দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে রাজধানী অগ্রাধিকার পাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অগ্নিনির্বাপণ বিশেষ যান জেলা শহরগুলোর মধ্যে কোথাও কোথাও দেওয়া হচ্ছে। তবে সেটা নির্ভর করছে, সেখানে কতগুলো শিল্পকারখানা আছে, তার ওপর। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) অগ্নিনির্বাপণের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা আছে। মানে হলো, পরিকল্পিত শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেই অব্যবস্থাপনার সুযোগ বেশি তৈরি হয়।
অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেই অব্যবস্থাপনার সুযোগ বেশি তৈরি হয়।
আইনে বলা আছে, প্রাথমিকভাবে দক্ষতার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কারখানায় থাকতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের যে সক্ষমতা রয়েছে, তার চেয়ে প্রয়োজন অনেক বেশি।
অর্থ দিয়ে যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না করা না যায়, তা তদারকির দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের।
ঢাকার বাইরে প্রচুর বড় শিল্পকারখানা তৈরি হচ্ছে। সেগুলোর ক্ষেত্রে অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা কী?
শাহিদউল্লাহ: যত্রতত্র শিল্পকারখানা যাতে গড়ে না ওঠে, সে জন্য সরকার চেষ্টা করে। কিন্তু বাস্তবে আসলে সবকিছু করা সম্ভব হয় না। এ নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে, প্রাণহানির ঘটনা বাড়ে। দেখতে হবে, কারখানা ও ভবনের অনুমতি কারা দিচ্ছে। স্বীকার করতে হবে, ফায়ার সার্ভিসের যে সক্ষমতা রয়েছে, তার চেয়ে প্রয়োজন অনেক বেশি। সম্পদের অপ্রতুলতাও একটা বাধা।
দাহ্য রাসায়নিক আমদানির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেখা গেছে, অবৈধভাবে দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। পরিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে কী বলবেন?
শাহিদউল্লাহ: যখন অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তখন তাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। কোথায় কতটা মজুত আছে, সেটা তদারকি করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের আগুনের ঘটনায় তো স্পষ্ট যে দাহ্য পদার্থ মজুতের ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা ছিল। এই পরিদপ্তর কোনোভাবেই তাদের দায় এড়াতে পারে না।
হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের আধুনিক সরঞ্জাম ও উপকরণ ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে, নাকি শুধু পানি দিয়েই নেভানোর চেষ্টা হয়েছে?
শাহিদউল্লাহ: নারায়ণগঞ্জে বিশেষ ধরনের ফোম ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, ঠিক বলতে পারব না। তবে পানির অভাব হয়নি। এটার কৃতিত্ব অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির নয়। পাশেই একটা জলাধার ছিল। সেখানে সাতটি পাম্প ব্যবহার করে পানি সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এখন বেশির ভাগ কারখানা হচ্ছে গ্রাম এলাকায়। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়। এতে কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে?
শাহিদউল্লাহ: রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর তাদের ভবন নির্মাণের অনুমতির বিষয়টি যাচাই করতে গিয়ে আমরা হতবাক হয়েছিলাম। তারা অনুমোদন নিয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। ফলে দেখা যাচ্ছে, এখন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভবনের পরিকল্পনা অনুমোদন করিয়ে সেখানে শিল্পকারখানা বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। এটা যে কত বড় হঠকারিতা, তা বলে বোঝানো যাবে না। ইউনিয়ন পরিষদে কোনো স্থপতি বা প্রকৌশলী আছেন? তাহলে কিসের ভিত্তিতে পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে? তাদের কি অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা আছে? এখানে স্থানীয় সরকার ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আরেক দ্বন্দ্ব রয়েছে। রাজউক ও সিটি করপোরেশন—দুটি সংস্থারই পরিকল্পনা পাস করানোর ক্ষমতা আছে। বিষয়টি বহুবার আলোচনায় এলেও সমাধান হয়নি।
শ্রমিকের পেশাগত ঝুঁকির বিষয়টি দেখার দায়িত্ব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের। তারা কি কোনো ভূমিকা রাখছে?
শাহিদউল্লাহ: শুধু দায়িত্বই নয়, এই অধিদপ্তর ফায়ার সার্ভিসকেও নির্দেশনা দিতে পারে। ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালায় কী কী বিষয় দেখতে হবে তার ‘চেক লিস্ট’ দেওয়া আছে। তারা কেমন দায়িত্ব পালন করছে, সেটা তো একের পর এক দুর্ঘটনার ধরনগুলো থেকেই বোঝা যাচ্ছে।
আগুনের ঘটনায় মৃত্যুর পর দেখা যায়, শ্রমিকেরা বের হতে না পারায় মৃত্যু বেশি হয়। অনেক সময় অভিযোগ ওঠে গেট বন্ধ থাকার। এ বিষয়ে কী বলবেন?
শাহিদউল্লাহ: তাজরীন গার্মেন্টসে আগুনের ঘটনার পর জানা গিয়েছিল যে কলাপসিবল গেটে তালা ছিল। এটা অপরাধ। এখনো যদি কারখানার গেটে তালা মেরে রাখা হয়, তার দায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কোনোভাবে এড়াতে পারে না। এটা দেখার দায়িত্ব এই অধিদপ্তরের। তাজরীনের ঘটনার পর বিষয়টি নিশ্চিত করতে কর্মসূচি চালানো হয়েছে। তদন্তে যদি প্রমাণ হয় হাসেম ফুডসের গেটও তালাবদ্ধ ছিল, তার দায় মালিকপক্ষকে নিতে হবে। এমনকি যদি সেফটি কমিটি না থেকে থাকে, তাহলেও জবাব দিতে হবে। আমাদের আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই।
ন্যাশনাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেলথ অ্যান্ড সেফটি কাউন্সিল তাদের ভূমিকা কতটা পালন করেছে?
শাহিদউল্লাহ: সরকার, মালিক সমিতি আর শ্রমিক—এই তিন পক্ষের সমন্বয়ে এই কাউন্সিল গঠিত। গত এক বছর এই কাউন্সিলের কোনো বৈঠক হয়নি। তবে প্রতি তিন মাস পরপর বৈঠক হওয়ার কথা। এক বছর আগেও নিয়মিত বৈঠক হতো। তবে এর মধ্যে একটা কাজ হয়েছে, শিল্প কারখানার জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি-২০১৩ তৈরি করেছে এই কাউন্সিল। তবে এ নিয়ে কোনো কর্মপরিকল্পনা হয়নি। এটাই বড় দুর্বলতা।
এখানে শ্রমিকদের ভূমিকা কতখানি?
শাহিদউল্লাহ: কাউন্সিলের সদস্যদের তিন ভাগের এক ভাগই শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি। তাঁরা বিভিন্ন কারণে আন্দোলন করেন। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য কখনো তাঁদের দাবি দেখিনি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কলাপসিবল গেটে তালা লাগানোর বিরুদ্ধে বড় আন্দোলন করতে দেখিনি।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কারখানার মালিকপক্ষ প্রভাবশালী। সে ক্ষেত্রে প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে তদন্ত করা ও প্রতিবেদন প্রকাশের উপায় কী?
শাহিদউল্লাহ: ক্ষমতাবান হতে পারেন আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে। তাঁরা অর্থ দিয়ে যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না করতে পারেন, সেটা তদারকির দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের। প্রশাসন পুরো ব্যাপারটি নজরে রাখবে। স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয় কিন্তু এসব ক্ষেত্রে সরাসরি দায়িত্বপ্রাপ্ত। তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে কোনোভাবেই প্রভাব খাটানো সম্ভব হবে না। দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটির দেওয়া সুপারিশগুলো স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে। এটা অপ্রকাশিত থাকে বলে অনেক কিছুই আর সামনে আসে না।
প্রথম আলো: হতাহত শ্রমিকেরা ক্ষতিপূরণ ঠিকভাবে পান না। এ দায় কে নেবে?
শাহিদউল্লাহ: ক্ষতিপূরণের তালিকা করে তিন পক্ষ মিলে—সরকার, মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠন। কোনো বিচ্যুতি হলে সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও জানতে চাইতে পারে। তাদের এ দায়িত্ব রয়েছে। এখানে গণমাধ্যমেরও বড় ভূমিকা আছে। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে শুরু করে সবকিছুই যদি তারা পর্যবেক্ষণে রাখে এবং প্রকাশ করে, তাহলে সংস্থা ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জবাবদিহির মধ্যে থাকবেন।