
বাস ছাড়া না ছাড়া নিয়ে তর্ক থেকে সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফা হাতাহাতি ও মারামারিতে ছাত্রলীগের অন্তত দুই কর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
বিবদমান পক্ষ দুটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, গত শনিবার রাতে ঘটনার সূত্রপাত হয়। ওই দিন সীতাকুণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে নগরে অনুষ্ঠিত মিলাদ মাহফিলে গিয়েছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রীর অনুসারীরা। সব নেতা-কর্মী না আসায় অনুসারীরা রাত ৯টার বাস নগরের নিউমার্কেট থেকে ৩০ মিনিট দেরিতে ছাড়ার নির্দেশ দেন। তখন বাসে ছিলেন আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরাও। তাঁরা এ নির্দেশ মানেননি। এ নিয়ে বাসে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক ও হাতাহাতি হয়। বাসও দেরিতে ছাড়ে।
চট্টগ্রাম নগর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে চুয়েট ক্যাম্পাস অবস্থিত। চুয়েটে যাওয়া-আসা করতে শনিবার রাত ৯টায় শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাস ছিল।
দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাছিরের অনুসারীরা শহীদ তারেক হুদা ও শেখ রাসেল হলে থাকেন। অন্যদিকে মহিবুল হাসানের অনুসারীরা থাকেন ড. কুদরাত–এ–খুদা হলে। এ ঘটনার জের ধরে রাতে ড. কুদরাত–এ–খুদা হলের অন্তত ১০টি কক্ষের তালা ভাঙেন নাছিরের অনুসারীরা। বিছানাপত্র ফেলে দেন তাঁরা।
এরপর মহিবুল হাসানের অনুসারীরা গিয়ে শেখ রাসেল হলের একটি কক্ষের তালা ভাঙেন।
ওই ঘটনার জেরে গতকাল আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। দুই পক্ষই রামদা, লাঠিসোঁটা ও ইট নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। ইটপাটকেলও ছোড়ে একে অপরকে। এ সময় দুজন কর্মী আহত হন।
জানতে চাইলে নাছির পক্ষের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ইফফাত হক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী পক্ষের নেতা সহসভাপতি আনাস মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, এটা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে করণীয় ঠিক করা হবে। আর তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।