ঝাড়ু, বেলচা হাতে রাস্তায় পুলিশ!

চট্টগ্রাম নগরের দামপাড়া এলাকায় রাস্তায় ফেলে রাখা ময়লা বেলচা দিয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন নগর পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল (ডানে)। সঙ্গে আছেন পুলিশের অন্য সদস্যরাও। ছবিটি গতকাল বেলা ১১টায় তোলা l প্রথম আলো
চট্টগ্রাম নগরের দামপাড়া এলাকায় রাস্তায় ফেলে রাখা ময়লা বেলচা দিয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন নগর পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল (ডানে)। সঙ্গে আছেন পুলিশের অন্য সদস্যরাও। ছবিটি গতকাল বেলা ১১টায় তোলা l প্রথম আলো

কেউ রাস্তায় ঝাড়ু দিচ্ছেন। আর কেউ রাস্তার ময়লাগুলো স্তূপ করছেন। অন্যরা স্তূপ হওয়া ময়লাগুলো ঝুড়িতে ভরে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলছেন। পথচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন যানবাহন থেকে যাত্রীরা একনজর দেখছেন পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের। কারণ তাঁদের সবার গায়ে পুলিশের পোশাক। হাতে অস্ত্রের পরিবর্তে ঝাড়ু, বেলচা ও ঝুড়ি।
গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ, কাজীর দেউড়ী ও ইস্পাহানি মোড়ে নগর পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডলের নেতৃত্বে নগরের বিভিন্ন সড়কে ময়লা পরিষ্কার করেছেন প্রায় এক হাজার পুলিশ সদস্য।
এদিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে যোগদানের পর নগর পুলিশ কমিশনার গত ঈদুল আজহায় নগরের বৈধ-অবৈধ বিলবোর্ডে ব্যানার টানিয়ে নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানানোর ঘটনায় নানা প্রশ্ন ওঠে। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হয়ে বিপুল অর্থ খরচ করে হাজারেরও বেশি ব্যানার টাঙানো নিয়ে নগরজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে ‘পুলিশ কমিশনারের বিলবোর্ড শুভেচ্ছায় নগরজুড়ে সমালোচনা’ শিরোনামে ১০ অক্টোবর প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিনই বিলবোর্ডে লাগানো ব্যানারগুলো খুলে ফেলা হয়।
আবদুল জলিল মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা পুলিশের প্রধান কাজ হলেও নগর পরিচ্ছন্নতার কাজও করেছে পুলিশ। এতে নগরবাসীর মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি হবে। শহর পরিষ্কার থাকলে মনের দিক দিয়েও মানুষ পরিচ্ছন্ন থাকবে। পুলিশের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এতেই পুলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের দূরত্ব কমে আসবে। এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না বলে তাঁর দাবি।
গতকাল সকাল ১০টায় নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে পরিচ্ছন্নতা অভিযান উদ্বোধন করেন নগর পুলিশ কমিশনার। অভিযানে নগরের বিভিন্ন থানা, ট্রাফিক ও ডিবি পুলিশ অংশ নেয়। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে নগরের জমিয়তুল ফালাহ, মোহাম্মদ আলী রোড, ইস্পাহানি মোড় ও কাজীর দেউড়ীর সড়কের ওপর থাকা ময়লাগুলো ঝাড়ু দিয়ে স্তূপ করা হয়। পরে স্তূপে থাকা ময়লাগুলো ঝুড়িতে ভরে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই সময় সড়কের পাশে থাকা দোকানদার ও পথচারীদের নির্দিস্ট ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার অনুরোধ জানান পুলিশ কমিশনার।
প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে। আবার অনেকে এ উদ্যোগকে লোক দেখানো বলে মন্তব্য করেছেন।
নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, রাস্তা পরিষ্কারের সময় পুলিশের কাছে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, রাস্তায় পর্যাপ্ত ডাস্টবিন পাওয়া যায় না। তাই রাস্তার ওপরেই আবর্জনা ফেলা হয়। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।