তালাক নোটিশে অবমাননাকর শব্দের ব্যবহার নিয়ে রুল

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

তালাক নোটিশে নারীর প্রতি অবমাননাকর, অমানবিক ও অযৌক্তিক শব্দের ব্যবহার প্রশ্নে জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।

রুলে নিকাহ রেজিস্ট্রারের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী তালাক নোটিশে অবমাননাকর, অমানবিক ও অযৌক্তিক এবং অবৈধ শব্দের ব্যবহার কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইনসচিব ও নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকার বাসিন্দা রাখী কে জামান ২ জুন ওই রিট করেন। তিনি বর্তমানে কানাডার উইন্ডসর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

রিটে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে রাকিব মুক্তাদির জোয়ারদারের সঙ্গে বিয়ে হয় রাখী কে জামানের। পরে ২০১৭ সালের অক্টোবরে রাখীকে তালাক নোটিশ পাঠান রাকিব। নোটিশের একাংশের ভাষ্য, ‘স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য, যা শরিয়তের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাঁর ওই চালচলন পরিবর্তন করার জন্য নিজে বহুবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এখনো তাঁর কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ ধরনের শব্দচয়ন অবমাননাকর, অমানবিক, অযৌক্তিক ও অবৈধ।’

নোটিশে এ ধরনের শব্দের ব্যবহার একজন নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এতে নারীর পরবর্তী বিয়ে বা দাম্পত্যজীবন শুরু করতে সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়।

১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন এবং ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিয়ে ও তালাক (নিবন্ধন) আইন অনুযায়ী এ ধরনের শব্দের ব্যবহার নারীর মানবাধিকার ও তাঁর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে। সেই সঙ্গে সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।