Thank you for trying Sticky AMP!!

বাঁশখালীর ঘটনায় বিচারিক অনুসন্ধান চেয়ে রিটের শুনানি কাল

হাইকোর্ট

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরিসহ প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনে বিচারিক অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের ওপর আগামীকাল সোমবার হাইকোর্টে শুনানি হতে পারে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ রোববার রিটটি উপস্থাপন করা হয়। রিটটি শুনানির জন্য কাল কার্যতালিকায় আসবে বলে বলেছেন আদালত। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন এই তথ্য জানিয়েছেন।

আসকের পক্ষে ২২ এপ্রিল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়। আজ রিটটি আদালতে উপস্থাপন করেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।

রিটে নিহত শ্রমিকদের পরিবার ও আহত শ্রমিকদের ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

১৭ এপ্রিল বাঁশখালীর গন্ডামারায় সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। আহত হন তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন।

চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্প গ্রুপ এস আলমের মালিকানায় এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। চীনা প্রতিষ্ঠান সেফকো থ্রি পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এখানে অর্থায়ন করেছে।

মাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, পবিত্র রমজান মাসে কর্মঘণ্টা ১০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা, শুক্রবার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৪ ঘণ্টা করাসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের শ্রমিকেরা। বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও গুলিতে হতাহত হওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে স্থানীয় চার বাসিন্দা নিহত হন। ওই ঘটনার পর গন্ডামারা এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়।

১৭ এপ্রিলের ঘটনায় নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে তিন কোটি টাকা ও আহত ব্যক্তিদের প্রত্যেককে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবসহ সাত সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাবর ১৮ এপ্রিল আইনি নোটিশ পাঠায় আসক।

নোটিশের জবাব না পেয়ে আসকের পক্ষে রিট করা হয়। রিটে এসএস ওয়ান পাওয়ার লিমিটেড, এস আলম গ্রুপ, সেফকো থ্রি ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন ও এইচটিজি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ কোম্পানি লিমিডেট যৌথভাবে যাতে হতাহত শ্রমিকদের আপাতত ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়, সে জন্য অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিটের আবেদনে দেখা যায়, ওই সংঘর্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঁচ থেকে ছয়জন শ্রমিক নিহত ও শতাধিক শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে এবং হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের পরবর্তী নিরাপত্তাসুরক্ষা নিশ্চিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা-ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।

প্রত্যেক নিহত শ্রমিকের পরিবারকে তিন কোটি ও আহত শ্রমিকদের দুই কোটি টাকা করে যৌথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।

রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় নিহত ও আহত শ্রমিকের পরিবারের পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসুরক্ষা নিশ্চিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, আইনসচিব, শিল্পসচিব, বাণিজ্যসচিব, জ্বালানিসচিব, পরিবেশসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ওই চার কোম্পানিসহ রিটে বিবাদীর সংখ্যা ২২।