
মুন্সিগঞ্জের সংসদীয় তিনটি আসনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করছে বিএনপি। এসব আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তরা গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে নিজ নিজ দলীয় প্রত্যয়নপত্র গ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাঁরা দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন, এবারও তাঁদের ওপর আস্থা রাখল দলটি।
মুন্সিগঞ্জ-১ (সিরাজদিখান-শ্রীনগর) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ মো. আবদুল্লাহ, মুন্সিগঞ্জ-২ (লৌহজং-টঙ্গিবাড়ী) আসনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ শিল্পপতি মিজানুর রহমান সিনহা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ এবং মুন্সিগঞ্জ-৩ (মুন্সিগঞ্জ সদর-গজারিয়া) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আবদুল হাই মনোনয়ন পেয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনটি আসনেই প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব—গণতন্ত্রের এই বাণীর যদি সঠিক বাস্তবায়ন হয়, তবে আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, আমার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নকাজ হয়। এই উন্নয়নের কারণে মানুষ ধানের শীষে ভোট দেবে।’
মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই আসনে বরাবরই বিএনপি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালামসহ এই আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন পাঁচজন। তবে দল ও দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি বিশেষ দায়িত্ব পালনের জন্য ত্যাগী নেতা হিসেবে মিজানুর রহমান সিনহাকে পুনরায় মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। লৌহজং উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. শাজাহান খান বলেন, মিজানুর রহমান সিনহা দলীয় নেতা হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। দলীয় পরিচয় ছাড়াও এলাকায় তাঁর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি রয়েছে। তিনি ২০০১ সালে সাংসদ হওয়ার পর রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, সেতু-কালভার্ট ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর যে উন্নয়ন করেছেন, তাতে উপজেলাটি দেশের মডেলে পরিণত হয়।
মিজানুর রহমান সিনহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষ বড় ব্যবধানে জয় পাবে। এ জয়ের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে দুঃশাসনের কারাগার থেকে মুক্ত করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দলীয় নেতা-কর্মীরা আমার নেতৃত্বে সংগঠিত আছেন। তাঁদের সবাইকে নিয়ে ধানের শীষের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে আনতে চাই।’
আবদুল হাই বলেন, ‘পাঁচবার নির্বাচিত হয়ে দেশ ও দলের জন্য কাজ করেছি। দল এ আসনে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আশা করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আবারও নির্বাচিত হব।’ তিনি অভিযোগ করেন, দেশে স্বচ্ছ নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।