স্টাইল

রঙিন মাহিন খান

অফিসের পোশাকে
অফিসের পোশাকে
বন্ধুদের আড্ডায় পরেন স্কার্ট। ছবি: কবির হোসেন

যেকোনো উৎসবের রং তাঁর মন ছুঁয়ে যায়। সেই রং স্থান পায় তাঁর তৈরি করা পোশাকে। নিজের অবশ্য সাদার প্রতি টানটা একটু বেশিই। দুর্বলতা তাঁর দেশজ কারুশিল্পের প্রতি। তিনি মাহিন খান। ডিজাইনার। ফ্যাশন হাউস মায়াসীরের স্বত্বাধিকারী। সম্প্রতি হয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশের সভাপতি। আজ থাকছে তাঁর স্টাইল।
ছোটবেলা থেকে পয়লা বৈশাখের ভোরে রমনার বটমূলে যান। এরপর খানিকক্ষণ ঘুরে বাড়িতে ফেরা। গত দুই বছর যদিও রমনার বটমূলে যাওয়া হয়নি। তবে চৈত্রসংক্রান্তির রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে গিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে। উৎসব ঐতিহ্য, বিশেষ করে বাংলার ঐতিহ্যবাহী উৎসব সব সময় ভালো লাগে ডিজাইনার মাহিন খানের। নিজেই জানালেন, ‘উৎসবের দিনগুলোতে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাই। সবাই মিলে নতুন পোশাক পরে বের হই।’
জামদানি, মসলিনসহ দেশি শাড়িই তাঁর পছন্দ। বিশেষ কোনো দিনে মাহিন খান শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজ পরেন। তবে বন্ধুদের সঙ্গে ঘরোয়া আড্ডায় বেছে নেন স্কার্ট। সুতির ক্যাজুয়াল পোশাক বেশি ভালো লাগে মাহিন খানের। নিজের অফিসে বা সাধারণ কোনো দিনে লেগিংস বা প্যান্টের সঙ্গে টপ, কুর্তা ও লম্বা শার্ট পরেন। তখন হাতে থাকে বড় আকারের চামড়ার ব্যাগ।
সাদা রং প্রিয় হলেও আজকাল উজ্জ্বল রঙের পোশাক তাঁকে টানছে। নিজের প্রতিষ্ঠান মায়াসীরের পোশাক, গয়না ও ব্যাগ ব্যবহার করেন বেশির ভাগ সময়। এর বাইরে জারা, থাইল্যান্ডের কয়েকজন ডিজাইনারের পোশাক পরেন। ব্যাগ ও রুপার অ্যান্টিক গয়নার প্রতি বিশেষ দুর্বলতা আছে তাঁর। পাথর, হীরার গয়নাও পরেন বিভিন্ন পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে। প্রাডা, ডলচে গাবানা, গুচি, ফ্যারাগামোর ব্র্যান্ডের ব্যাগ প্রিয় এই ডিজাইনারের। মায়াসীরের বটুয়া ও ক্লাচ ব্যাগও তাঁর পছন্দের তালিকায় আছে। চটি স্যান্ডেলে স্বচ্ছন্দ তিনি।

পছন্দ সিরামিক পণ্য

সাড়ে ছয়টার মধ্যে সাধারণত ঘুম থেকে ওঠেন। এরপর দুই সন্তানকে স্কুলের জন্য তৈরি করেন। ‘ওদের স্কুলে পাঠিয়ে দিয়ে সকালের চা হাতে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার নিয়ে বসি। তখন চিনি ছাড়া তিন কাপ চা খাওয়া হয়ে যায়। কোনো বিশেষ খবর বা পাতা নয়, পুরো পত্রিকা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ার চেষ্টা করি।’ বললেন মাহিন খান।
সকাল ১০টার আগেই মাহিন খান ছোটেন অফিসের দিকে। অফিসেই সারেন দুপুরের খাবার। মেন্যু বেশ হালকা—সালাদ ও স্যুপ।
মাহিন খান নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করেন সব সময়। ‘বিকেলে বাসায় ফিরে চলে যাই জিমে। জিমে যেদিন যেতে পারি না সেদিন সকালে বা রাতে ব্যায়াম করে নেই।’ রাতের খাবার সাধারণত মাহিন খেয়ে নেন সাতটার মধ্যেই। বাইরের খাবার চেষ্টা করেন এড়িয়ে চলতে। নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চা কেন্দ্রে না গেলেও বাসায় ত্বকের চর্চা করেন।

এই সময়ের প্রিয় জুতা ব্যাগ

ফেমিনাসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ম্যাগাজিন পড়তে ভালোবাসেন। বিভিন্ন ব্যক্তির আত্মজীবনীও পড়েন। এ ছাড়া বাংলাদেশের কারুশিল্প নিয়ে যেকোনো লেখা পড়তে ভালোবাসেন তিনি। ইদানীং শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে লিখতেও তাঁর ভালো লাগছে।
বন্ধুদের সঙ্গে দেশের বাইরে বেড়াতে যেতে ভালো লাগে। বছরে দুবার পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে যান। কোথাও বেড়াতে গেলে বুদ্ধমূর্তি, সিরামিকের শোপিস ও চিত্রকর্ম সংগ্রহ করেন। গৌতম বুদ্ধের জীবনাদর্শ মাহিন খানকে আলোড়িত করে।

রুপার গয়নার প্রতি আছে বিশেষ দুর্বলতা
বিশেষ দিনে পরেন সালোয়ার-কামিজ