Thank you for trying Sticky AMP!!

শিবচরে চিকিৎসক দম্পতির করোনা জয়

‘করোনা টেস্টে “পজিটিভ” হওয়ার পর ভয় পাওয়া যাবে না। সাহস রাখতে হবে মনে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা থেকে মুক্তি আসবেই।’ এসব কথা করোনাজয়ী মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহামুদা আক্তারের।

টানা ২৬ দিন করোনার সঙ্গে যুদ্ধের পর বুধবার দুপুরে মাহামুদাকে সুস্থ ঘোষণা করে মাদারীপুর জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। একই সঙ্গে তাঁর সাত বছরের একমাত্র মেয়েও করোনা থেকে সেরে উঠেছে। মাহামুদা কোভিড-১৯ ‘পজিটিভ’ হওয়ার ছয় দিন আগে তাঁর স্বামী শহিদুল ইসলামও করোনায় আক্রান্ত হন। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনিও এখন সুস্থ।

বুধবার বিকেলে এই চিকিৎসক দম্পতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনা টেস্টে “পজিটিভ” হওয়ার পর পরিবার নিয়ে কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। তবে মনে সাহস রেখেছি। ভেবেছি, আমরা সুস্থ হয়ে যাব। অসুস্থ হওয়ার পরও  রোজা রেখেছি, নামাজ পড়েছি, সৃষ্টিকর্তাকে মনেপ্রাণে স্মরণ করেছি। দোয়া চেয়েছি শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে। সবার ভালোবাসা আর সহকর্মীদের অনুপ্রেরণায় আমরা সুস্থ হতে পেরেছি।’

শিবচর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে মাহামুদা আক্তারের চিকিৎসক স্বামী শহিদুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ থেকে শিবচরে আসেন। পরে তাঁর শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে গত ৯ এপ্রিল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১১ এপ্রিল পাওয়া প্রতিবেদনে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়। পরে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এরপর গত ১৪ এপ্রিল স্বামীর সংস্পর্শে আসা স্ত্রী ও মেয়ের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ১৭ এপ্রিল ল্যাব থেকে আসা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে মাহামুদা ও তাঁর মেয়ের করোনা শনাক্ত হয়। পরে তাঁদের বাড়িতেই আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। গত এক সপ্তাহে মাহামুদা ও তাঁর মেয়ের চারবার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে তিনবার তাঁদের নমুনা পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ এবং একবার ‘নেগেটিভ’ আসে। এরপরই তাঁদের সুস্থ ঘোষণা করা হয়।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাহামুদা আক্তার বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামীর বাড়ি কুমিল্লায়। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর আমি শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করি। এর পর থেকে এখানেই সেবা দিয়ে গেছি। করোনায় আক্রান্ত হলেও আমার ছোট সংসারের সবাই এখন সুস্থ। আমরা স্বামী-স্ত্রী আবারও আমাদের কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারব, এটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছে।’

করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে মাহামুদার স্বামী শহিদুল ইসলাম শিবচরে তাঁর স্ত্রীর কর্মস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারে চলে আসেন। তিনি সেরে উঠে স্ত্রী ও সন্তানের পাশে থেকে সেবাও করেছেন। এ বিষয়ে শহিদুল বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ আগেই আমি সেরে উঠেছি। তারপর আমি স্ত্রী ও সন্তানের কাছে চলে আসি। এখানে ওদের দেখাশোনা করি। আল্লাহর রহমতে সবাই সুস্থ হতে পেরেছি এটাই অনেক।’

বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলার সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিবচরে চিকিৎসক মাহামুদার পরিবার এখন সুস্থ। যদিও তাঁর স্বামী আরও আগে সুস্থ হয়েছেন। বুধবার সুস্থ হয়েছেন মাহামুদা ও তাঁর মেয়ে। তবে তাঁরা আরও ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। এরপর তাঁরা আবার সাধারণ কর্মজীবনে ফিরে আসতে  পারবেন।’