মামলা চলবে, নিষ্পত্তিতে তিন মাস
সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে দেড় যুগ আগে হামলার ঘটনায় হওয়া মামলা বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
ওই মামলা বাতিল চেয়ে এক আসামির করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন। এই রুল খারিজ করে আজ রায় দেওয়া হয়।
রায়ে আদালত বলেছেন, ‘এটি পুরোনো মামলা। সম্ভাব্য তিন মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতকে মামলা নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।’
ওই ঘটনার সময় আসামি রকিব ওরফে রাকিবুর রহমানের বয়স দশ বছর ছিল উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টা মামলাটি বাতিল চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে ওই আবেদনটি করেছিলেন রকিব। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুলসহ স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। এর পর থেকে আর ওই মামলার কার্যক্রম এগোয়নি। বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি রাষ্ট্রপক্ষ এ-সংক্রান্ত রুল শুনানির উদ্যোগ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রুল শুনানি শুরু হয়। ৬ অক্টোবর রুলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৮ অক্টোবর রায়ের জন্য দিন রাখেন।
আদালতে আসামি রকিবের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।
পরে মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হত্যাচেষ্টা মামলাটি বাতিল প্রশ্নে রুল খারিজ করে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। অভিযোগ গঠনের সময় রকিবের বয়স ১৬ বছরের বেশি ছিল, তাই শিশু আইন প্রযোজ্য হবে না। রুল খারিজ হওয়ায় মামলার কার্যক্রম সচল হবে।’
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরায় যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সাংবাদিক। ওই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে যান, তবে তা গ্রহণ করা হয়নি।
রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য, ঘটনার এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন হয়। এর বিরুদ্ধে আসামি রকিব হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। এ ছাড়া আসামিপক্ষে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। আজ রুল খারিজের মধ্য দিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা চলায় বাধা কাটল।
আরও পড়ুন
-
নাইজারে মার্কিন বাহিনীর অবস্থান থাকা ঘাঁটিতে রুশ সেনাদের প্রবেশ
-
প্রথম টি–টোয়েন্টি: তানজিদের অভিষেক, টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
-
সফর বন্ধের ঘোষণা দিয়ে সাড়ে তিন মাসেই বিদেশ গেলেন প্রতিমন্ত্রীসহ ২৩ জন
-
উপজেলা চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে বদির গুলি, থানায় অভিযোগ
-
আমেথি থেকে সরে শেষ মুহূর্তে কেন রায়বেরেলি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন রাহুল