২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল—এই ১৩ বছরে ২৮ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশ নেন। পাস করেন ১১ জন। ২০১৬ সালে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট ও ২০১৮ সালের দাখিল পরীক্ষায় কেউ অংশ নেয়নি। আগামী ২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া আলিম পরীক্ষায়ও অংশ নেওয়ার মতো পরীক্ষার্থী নেই।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার দেউলীসুবিখালী ইউনিয়নের লেমুয়া চন্দ্রকান্দা আলিম মাদ্রাসার চিত্র এটি। ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এটির একাডেমিক স্বীকৃতি বাতিল করে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশ দেয়। এরপরও তাঁরা বেতন-ভাতা তুলে যাচ্ছেন।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম ছায়ফ উল্যাহর সই করা ওই চিঠির বিষয় ছিল—লেমুয়া চন্দ্রকান্দা আলিম মাদ্রাসার এমপিও বন্ধকরণ প্রসঙ্গে। চিঠিতে ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মাদ্রাসাটি থেকে ২৮ জন শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১১ জনের পাস করার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে ২০০৯, ২০১০ ও ২০১৩ সালে একজন শিক্ষার্থীও পরীক্ষায় অংশ নেয়নি বলে উল্লেখ রয়েছে। এতে মাদ্রাসাটির একাডেমিক স্বীকৃতি বাতিল করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অনুরোধ জানানো হয়। এর অনুলিপি দেওয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, পটুয়াখালী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও)।
এ ব্যাপারে ইউএনও শাহ মো. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের চিঠিটি পেয়েছি এবং বেতন–ভাতা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছি।’
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মাদ্রাসাটির পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসাটির শিক্ষকদের বহুবার অনুরোধ করেছি, ঠিকভাবে চাকরি করার জন্য। কিন্তু তাঁরা আমার কথা শোনেননি। আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আমি আর মাদ্রাসায় যাইনি।’
মাদ্রাসাটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আলাউদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ‘সাবেক অধ্যক্ষের আমলে এখানে অনিয়ম হয়ে থাকতে পারে। আমি মাস ছয় আগে দায়িত্ব পেয়েছি এবং সবকিছু ঠিকঠাক করার চেষ্টা করছি।’ তিনি আরও জানান, ১৯৫১ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ১১ জন শিক্ষকসহ ১৩ জন চাকরি করছেন। প্রতিষ্ঠানটি যাতে ধ্বংস হয়ে যায়, কিছু ব্যক্তি এ ব্যাপারে নানা অভিযোগ দিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটি বাঁচাতে সবার সহযোগিতা চান।