Thank you for trying Sticky AMP!!

'আব্বা, এনামুল পুইড়া মইরা গেছে'

ঢাকা মেডিকেলের মর্গের সামনে স্বজনদের আহাজারি।

রাজধানীর চকবাজার এলাকায় রাজ্জাক ভবনে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে লাশ আসছে। হাসপাতালে মানুষের ভিড়। স্বজনের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী। কেউ ডুকরে কাঁদছেন। কেউ স্বজনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। একজন আরেকজনকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের চিত্র এমনই হৃদয়বিদারক। লাশের সংখ্যা বাড়ছে, আর মানুষের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে পরিবেশ।

তুহিন নামের একজন কেঁদে মোবাইল ফোনে বলছে, ‘আব্বা, আমি তুহিন, এনামুল পুইড়া মইরা গেছে। আমি আর রাজীব খুঁইজ্যা খুঁইজ্যা ঢাকা মেডিকেল মেডিকেল এসে তাঁকে খুঁইজ্যা পাইছি।’

পুরান ঢাকার চকবাজারে রাজ্জাক ভবনে লাগা আগুনে হারিয়েছেন স্বজনকে। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

এনামুলের পুরা নাম কাজী এনামুল হক অভি। তিনি ঢাকা সিটি কলেজ থেকে বিবিএ পড়েছেন। রূপালী ইনস্যুরেন্সে ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। এনামুলের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ। তিনি ওই এলাকায় থাকতেন। রাতে দাঁতের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। তুহিন, কাজী আর নিহত এনামুল সমবয়সী। সম্পর্কে তুহিনের ভাতিজা এনামুল।

ঢাকা মেডিকেলের মর্গের সামনে স্বজনদের আহাজারি।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর) মো. তারেক হাসান ভুঁইয়া বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেলে ৬৫ জনের লাশ এসেছে। এর মধ্যে ৫৭ জন পুরুষ, ৫ জন নারী ও ৩টি শিশুর লাশ। লাশগুলো শনাক্তের সুবিধার্থে নম্বর দিয়ে রাখা হচ্ছে। স্বজনেরা এসে শনাক্ত করতে পারলে তাঁদের নম্বরগুলো জানানো হচ্ছে।

অগ্নিকাণ্ডে নিহত সিদ্দিকুল্লাহ চকবাজারে কসমেটিকসের ব্যবসা করতেন। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে। তিনি গতকাল রাতে বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আর বাড়িতে যাওয়া হয়নি। তিনি একটি হোটেলে খেতে বসেছিলেন। আগুন লাগায় আর বেরোতে পারেননি। তাঁর ছেলে মোহাম্মদ বাবু (২০) মেডিকেলের সামনে বসে বিলাপ করছিলেন।

ঢাকা মেডিকেলের মর্গের সামনে স্বজনদের আহাজারি।

হাসপাতালে সামনে ডুকরে কাঁদতে দেখা যায় জরিনা বেগমকে। তাঁর দুই ভাই মোহাম্মদ আলী ও অপু। মোহাম্মদ আলীর তিন বছরের ছেলে আরাফাত পুড়ে মারা গেছে। ঘটনার সময় তাঁরা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন।

একটি মসলা কোম্পানিতে কাজ করতে মো. জুম্মন। তাঁর দুই ছেলে রাশেদ ও রাব্বী। হাসপাতালের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। রাশেদ কাঁদতে কাঁদতে বলেন, এতগুলো মানুষ পুড়ে মারা গেল। এটা সহ্য করার মতো নয়।

আরও পড়ুন: