Thank you for trying Sticky AMP!!

'ওরে নীল দরিয়া'য় ফারুকের প্রচার

আকবর হোসেন পাঠান

বেলা আড়াইটা, গুলশান-২-এর ওয়ান্ডারল্যান্ডের বিশাল মাঠের বড় অংশজুড়ে শামিয়ানা টানানো। এর নিচে বেশ কয়েকটি বড় সাউন্ডবক্স রাখা। মাঠে তখনো তেমন লোকজন নেই। হঠাৎ করে সাউন্ডবক্স দিয়ে ভেসে এল বাঁশির সুর। সুর থামতেই বরেণ্য শিল্পী আবদুল জব্বারের কণ্ঠে ভেসে এল গান, ‘ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া...ওরে সাম্পানের নাইয়া, আমায় দেরে দে ভিড়াইয়া।’ এভাবে পুরো গানটি বাজানো হলো গোটা তিনেক বার। শেষ হতেই ভেসে এল আব্দুল আলীম ও সাবিনা ইয়াসমিনের ‘সুজন সখী’ ছবির ‘সব সখীরে পার করিতে নেব আনা আনা...তোমার কাছে পয়সা নিব না’গানটি। বাংলা চলচ্চিত্রের কালজয়ী দুটি গান বাজানোর পরই ‘এসেছে এসেছে আবার ইলেকশন ইলেকশন’ দিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়া হলো। আসলে এটি কোনো কনসার্ট বা সংগীতানুষ্ঠান ছিল না।

আজ মঙ্গলবার পড়ন্ত দুপুরে আয়োজনটি ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আকবর হোসেন পাঠানের কর্মিসভা। আসল নামের চেয়ে এই প্রার্থী ‘ফারুক’ নামে বেশ পরিচিতি। শুধু পরিচিতি নন, খ্যাতিও পেয়েছেন। তারকাখ্যাতির কারণে রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক পেয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমণি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘লাঠিয়াল’—এর মতো বিখ্যাত চলচ্চিত্রের নায়ক ফারুক। নিজের অভিনীত ছবির গানগুলো বাজিয়ে আজই প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারাভিযান শুরু করেন ফারুক।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে ফারুক সভাস্থলে আসার আগে গুলশান, বনানী, ভাষানটেক, ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকা থেকে একের পর এক মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী চলে আসেন। ফারুকের সঙ্গে চিত্রনায়িকা নূতন, অঞ্জনা ও অভিনেতা ড্যানি সিডাক সভায় বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া ঢাকা-১৭ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতারাও বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, ১৮ বছর পর এই আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এবার আওয়ামী লীগ আসনটিতে লড়াই করতে নেমেছে। ১০ বছর ধরে ক্ষমতার স্বাদ পাননি দলের নেতা-কর্মীরা। এলাকার সাংসদকেও তাঁরা কাছে পাননি। সাংসদকে দেখতেও পাননি। লাভ বলতে শুধু রাতের বেলা শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। তাই যেভাবে হোক নৌকার প্রার্থী ফারুককে জিতিয়ে আনতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ফারুক বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আমি ঢাকার অন্য একটি আসন থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নেত্রী বলেছেন তুমি ঢাকা-১৭ আসনে যাও। নেত্রীর নির্দেশে আমি আপনাদের এখানে এসেছি। নেত্রী বলেছেন, এই এলাকাটির বড় একটি অংশ অবহেলিত। অবহেলিত মানুষের দুঃখ সরিয়ে দেওয়ার জন্য তোমাকে সেখানে যেতে হবে।’

ঢাকা-১৭ আসনে চিত্রনায়ক ফারুকের প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী। ২০-দলীয় জোটের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। লাঙ্গল প্রতীকে রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ এবং সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা।