এইচ বি এম ইকবাল
এইচ বি এম ইকবাল

এইচ বি এম ইকবালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রিমিয়ার ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান চলতে থাকায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবালের দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ আরও ১৯ জনের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

দুদকের আবেদনে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতে বেঞ্চ সহকারী মো রিয়াজ হোসেন জানান, এইচ বি এম ইকবালসহ ২০ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. হোসাইন শরিফ। দুদকের আইনজীবী ইশতিয়াক আহমেদ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা এইচ বি এম ইকবালের ছেলে–মেয়েরা হলেন মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল, মঈন ইকবাল ও নওরীন ইকবাল। তাঁরা সবাই বেসরকারি ব্যাংকটির পরিচালক ছিলেন। তাঁদের ছাড়াও আরও দুই সাবেক পরিচালক আরিফ আলম এবং ফৌজিয়া রেকজা বানু এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন।

ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের যাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা এসেছে, তাঁদের মধ্যে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু জাফরের পাশাপাশি সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা হলেন—খন্দকার ফজলে রশিদ, কাজী আবদুল মজিদ, এম শাহ আলম সারোয়ার, নিয়াজ হাবীব, মাসিহুল হক চৌধুরী, এ কে এম মাজেদুর রহমান, ড. এম রিয়াজুল করিম। অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা হলেন—সৈয়দ নওশের আলী, শহীদ হোসেন মল্লিক, শাহেদ সেকান্দার, শামসুদ্দিন চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমিন। ব্যাংকটির গুলশান শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এম ওমর খসরুর বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, এইচ বি এম ইকবাল এবং তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ পরস্পর যোগসাজশে প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখা অফিস ভাড়া বাবদ ১ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন স্টেশনারি খাতে ব্যয় দেখিয়ে ১ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

আবেদনে আরও বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে প্রিমিয়ার ব্যাংক থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ বিতরণ দেখিয়ে ৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিভিন্ন ব্যক্তির নামে এফডিআর খুলে অবৈধভাবে অতিরিক্ত মুনাফা দিয়ে শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। প্রিমিয়ার ব্যাংক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অর্থ লুটপাট, বিপিএল এবং টেলিভিশনে ভুয়া প্রচার দেখিয়ে শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

ইকবাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ অভিযোগ–সংশ্লিষ্টরা দেশ ছাড়ার করার চেষ্টা করছেন বলে খবর পাওয়ার কথা জানিয়ে দুদক আদালতকে বলেছে, তাঁরা পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে জন্য সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাঁদের বিদেশ যাওয়া ঠেকানো প্রয়োজন।