বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের মতবিনিময় সভা

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাধা দিতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এই আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। আজ সোমবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কার্যালয়ে প্রস্তাবিত অভিন্ন পারিবারিক আইন (ইউএফসি) বিষয়ে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় তরুণ-তরুণীরা বলেন, ছোট থেকে নারীর প্রতি বৈষম্য দেখে আসছেন তাঁরা। ধর্মীয় বয়ানের মাধ্যমে অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাধা দিতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। হিন্দু রীতিনীতি বৈষম্যে পরিপূর্ণ। এসব রীতিনীতি আইন হিসেবে ব্যবহার করতে শেখানো হয়েছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে। বিয়ে নিবন্ধন সবার জন্য বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। সব ধর্মের ও সব শ্রেণির নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন করা হলে তা কল্যাণকর হবে।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ১৯৮৯ সাল থেকে সমাজে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। প্রযুক্তির প্রসারের মধ্য নিয়ে নারীর যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশেও হতে হবে। অভিন্ন পারিবারিক আইনের পক্ষে জনমত তৈরি করা সহজ কাজ নয়। এ জন্য সমাজের মধ্যে ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় ওয়াজে নারীবিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধে এবং সমতা প্রতিষ্ঠায় তরুণদের সোচ্চার হতে হবে। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারীকেই কথা বলতে হবে। সবাই নিজ নিজ স্বার্থ অনুসারে নারীকে ব্যবহার করছে। নারী অধিকার যেন কারও লক্ষ্য পূরণের হাতিয়ার না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

তরুণ–তরুণীদের প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক দীপ্তি শিকদার বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের বিষয়টি ধর্মের দোহাই দিয়ে পিছিয়ে দেওয়া হয়। এখানে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণের অভাবও লক্ষ করা যায়। অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ধারাবাহিকভাবে তৃণমূল থেকে জনমত তৈরির কাজ করছে।

সভায় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা। তরুণ প্রতিনিধির মধ্যে বক্তব্য দেন শিউলি বিশ্বাস, মুমতাহিনা, রীতা জেসমিন, জারিন চৌধুরী, ফাহমিদা নাজনীন এবং প্রজ্ঞা লাবণী সাদিয়া।

সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল কর্মকর্তা সিননোমে মারমা।