
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করতে প্রস্তুতির জন্য একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীরা যতটুকু সময় পেয়েছিলেন, ততটুকু সময় পাননি মুক্তিযোদ্ধা ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু—এই অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন জেড আই খান পান্না।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় জাসদ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে করা মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল–২–এ আজকে বক্তব্য উপস্থাপন করেছে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। সেখানে ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন করেছে প্রসিকিউশন।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য এক মাস সময়ের আবেদন করেন হাসানুল হক ইনুর আইনজীবীরা। তবে ২৮ অক্টোবর (আগামী মঙ্গলবার) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল–২। উল্লেখ্য, এই শুনানিতে সাধারণত আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ থেকে আসামির অব্যাহতির আবেদন করে থাকেন।
এ মামলার একমাত্র আসামি হাসানুল হক ইনু। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন।
শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে হাসানুল হক ইনুর আইনজীবী জেড আই খান পান্না সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের (ইনুর আইনজীবীদের) যে আবেদন, সেখানে অব্যাহতির প্রার্থনা করতে হবে। ট্রাইব্যুনাল অব্যাহতি না–ও দিতে পারেন, দিতেও পারেন। কিন্তু সেটার জন্য তো তাঁদের স্টাডি (পড়াশোনা) লাগবে। এখন এতগুলো পৃষ্ঠা, এতগুলো ইকুইপমেন্ট (অডিও, ভিডিওসহ নানা উপকরণ), তারা (প্রসিকিউশন) যেটা বলেছে সেটা স্টাডি—এসব করার জন্য তো সময় প্রয়োজন। সেটা তাঁরা (ইনুর আইনজীবীরা) পাননি। যেটা যুদ্ধাপরাধীরা পেয়েছেন, সেটা হাসানুল হক ইনু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পাননি।
জেড আই খান পান্না বলেন, গোলাম আযমসহ (মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত এবং জামায়াতে ইসলামীর সাবেক শীর্ষ নেতা) অন্যরা এই সময় পেয়েছেন। যাঁরা বাংলাদেশের এক্সিসট্যান্সে (অস্তিত্বে) বিশ্বাস করেন না।
জেল কর্তৃপক্ষ ইনুর আইনজীবীদের ইলেকট্রনিক যন্ত্র নিয়ে কারাগারে প্রবেশ করতে দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন জেড আই খান পান্না। তিনি বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি লড়াই করে যাবেন।
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ইনুর আইনজীবী আজকে ট্রাইব্যুনালে বলেছেন, ইলেকট্রনিক যন্ত্র নিয়ে তাঁদের জেলখানায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে প্রসিকিউশনের মতো ট্রাইব্যুনাল জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, বিধি অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষের ওপর প্রসিকিউশনের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। ইলেকট্রনিক যন্ত্র নিয়ে আইনজীবী ঢুকতে পারবেন কি পারবেন না, সেটা কারা বিধি অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। তাঁদের (ইনুর আইনজীবীর) আবেদন আর গ্রহণ করেননি ট্রাইব্যুনাল।