পাবনা-১ ও পাবনা-২ সংসদীয় আসন আগের মতো পুনর্বহাল করতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও এক প্রার্থী পৃথক আবেদন করেছেন। আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
সংসদীয় আসন দুটির সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। ঘোষিত রায়ে পাবনা-১ আসন থেকে বেড়া উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা বাদ দিয়ে পাবনা-২ আসনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া–সংক্রান্ত ইসির গেজেটের অংশটুকু আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে পাবনার সংসদীয় আসন দুটি আগের মতো পুনর্বহাল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে পাবনা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান এবং নির্বাচন কমিশন পৃথক আবেদন করে। আবেদন দুটি চেম্বার আদালতের আজকের কার্যকালিতায় ২৬ ও ২৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে নাজিবুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী এ বি এম ইমদাদুল হক খান শুনানিতে ছিলেন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কায়সার কামাল ও আইনজীবী এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী শুনানিতে ছিলেন।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, চেম্বার আদালত আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদন শুনানির জন্য আগামী ৪ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেছেন। সীমানার ব্যাপারে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইসি যাতে কোনো পদক্ষেপ না নেয়, সে জন্য ইসির আইনজীবীকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন দুটি করা হয়েছে জানিয়ে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ বা স্থিতাবস্থা দেওয়া হয়নি। ফলে হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল থাকছে। তবে আদালত নির্বাচন কমিশনকে বলেছেন, কোনো গেজেট করবেন না, এভাবে থাকবে। আগামী ৪ জানুয়ারি শুনবেন।
রিট আবেদনকারী পক্ষ জানায়, স্বাধীনতার পর থেকেই পাবনা-১ আসনটি পুরো সাঁথিয়া উপজেলা এবং বেড়া পৌরসভা ও বেড়া উপজেলার চারটি ইউনিয়ন (হাটুরিয়া নাকালিয়া, নতুন ভারেংগা, চাকলা ও কৈটোলা ইউনিয়ন) নিয়ে গঠিত ছিল। অন্যদিকে পাবনা-২ আসনে বেড়া উপজেলার বাকি পাঁচটি ইউনিয়ন ও পুরো সুজানগর উপজেলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত ৪ সেপ্টেম্বর এ-সংক্রান্ত চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে নির্বাচন কমিশন সাঁথিয়া উপজেলাকে এককভাবে পাবনা-১ আসন এবং সুজানগর ও বেড়া উপজেলাকে মিলিয়ে পাবনা-২ আসন হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বেড়া উপজেলার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম ও সাঁথিয়া উপজেলার বাসিন্দা আবু সাঈদ হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে ১৮ ডিসেম্বর ওই রায় দেন হাইকোর্ট।