পুলিশ মিছিল আটকে দিলে সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন জুলাই ঐক্যের নেতা-কর্মীরা। বাড্ডা, ঢাকা; ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
পুলিশ মিছিল আটকে দিলে সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন জুলাই ঐক্যের নেতা-কর্মীরা। বাড্ডা, ঢাকা; ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

জুলাই ঐক্যের হুঁশিয়ারি

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী ও শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে হাইকমিশনে ঢুকব

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দ্রুত ফিরিয়ে না দিলে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই ভারতীয় হাইকমিশনে ঢুকে পড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জুলাই ঐক্য।

আজ বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে এ হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচি শেষ করেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সংগঠনের মোর্চা ‘জুলাই ঐক্য’।

শেখ হাসিনাসহ জুলাই গণহত্যার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এবং ‘ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তুলে গত বুধবার এ কর্মসূচি ঘোষণা করে মোর্চাটি।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বেলা তিনটার দিকে রাজধানীর রামপুরা থেকে জুলাই ঐক্যের সংগঠকদের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিকেল চারটার দিকে বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। পরে সেখানেই সড়কে বসে পড়েন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা।

এরপর সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’; ‘ভারতীয় আধিপত্য, মানি না, মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় তাঁদের হাতে ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী নানা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

আজকের কর্মসূচিতে কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু ও জাকসু) একাধিক নেতা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

জুলাই ঐক্যের সংগঠক ইসরাফিল ফরাজি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজকের এই কর্মসূচি ছিল একটি সতর্কবার্তা। আমরা জানতে পেরেছি, ভারত লবিস্ট নিয়োগ করেছে গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের জন্য, যারা বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের কাছে যাচ্ছে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকেও একইভাবে আওয়ামী লীগকে ফেরানোর তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে।’

ভারতের সঙ্গে থেকে যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, তাদের ‘সাবধান করে দিয়ে’ ইসরাফিল ফরাজি বলেন, ‘আজ আমরা থেমে যাচ্ছি, সামনে আমাদের থামানোর ক্ষমতা প্রশাসন দেখাতে পারবে না। আজ আমরা হাজারে এসেছি, সামনে লাখে আসব। শেখ হাসিনাসহ সকল খুনিদের যদি ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে সামনের দিনগুলো ভারতের জন্য ভালো হবে না।’

‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ঢাকা; ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

কর্মসূচিতে জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক যুবাইর বিন নেছারী ওরফে এ বি জুবায়ের বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি, (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) কান খুলে শুনে রাখো, যদি তোমাদের আগ্রাসন বন্ধ না হয়, যদি আর সীমান্তে গুলি চলে, যদি আমাদের দেশের খুনিদের আশ্রয় দাও, হাসিনাকে ফেরত না দাও; তাহলে তোমাদের আধিপত্যবাদ বন্ধ করার জন্য আমরা যা যা করা দরকার, সেটিই করব।’

এ সময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আজকে আমরা তোমাদের প্রতি আমাদের যে ঘৃণা, সেই ঘৃণা প্রদর্শনের জন্য হাইকমিশন পর্যন্ত এসেছি। আজকে এখানে থেমেছি; যদি তোমরা সংশোধন না হও, তাহলে ভেতরেও (হাইকমিশন) ঢুকব।’