
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে কোর প্রশিক্ষকদের দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এ মন্তব্য করেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো আগে ছিল না। নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে রাজনীতি, আইনশৃঙ্খলা বা অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত। আগেও আইনশৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ কমবেশি ছিল। তবে এখন হয়তো এর মাত্রাটা একটু বেশি।’
এআইয়ের (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অন্যান্য চ্যালেঞ্জের তুলনায় এআই’র ব্যবহার এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের চ্যালেঞ্জ আগে ছিল না। কেমন চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে, যেটা আমরা এখনো জানি না।’
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আমাদের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সুতরাং ভুল ও অপতথ্য (মিস ইনফরমেশন অ্যান্ড ডিসইনফরমেশন) মোকাবিলার জন্য আমরা “সেন্ট্রাল ডেটা সেল” গঠন করব। আর এটাকে আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়ে যেতে হবে। বার্তাটা গ্রামেগঞ্জে, চর এলাকা, পাহাড়ি এলাকায়সহ সব জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। যাঁরা ট্রেনিং নেবেন, তাঁরা এই দায়িত্ব পালন করবেন।’
নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘এবারের নির্বাচন ঝুঁকিপূর্ণ হবে। সাবেক এক সিইসিকে অপদস্থ করা হয়েছে এবং আরেকজন সাবেক সিইসিও বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন, যা দুঃখজনক।’
এই নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘এই পরিস্থিতির জন্য দায় নির্ধারণের বিষয়টি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন, যা ভবিষ্যতে হবে। তবে বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মূল করণীয় হলো নিজের দায়িত্বকে আইন ও সংবিধান অনুযায়ী যথাযথভাবে পালন করা। কারও কার্যকলাপ বা ভাবনার দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
আবদুর রহমানেল মাছউদ জোর দিয়ে বলেন, দায়িত্ব আইনানুগভাবে পালন করাই প্রকৃত ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’। নির্বাচন কর্মকর্তাদের সততা, নৈতিকতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করা অপরিহার্য। এবার ভালো ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হবে এবং নির্বাচন কমিশনের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা, যার কোনো বিকল্প নেই।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ প্রবাসীদের ভোট পদ্ধতি ও আইনকানুন বিষয়ে ভালো প্রশিক্ষণ দেওয়ার জোর দাবি জানান। তিনি জানান, আদালতের আদেশে চাকরি ফিরে পেয়ে নির্বাচন কমিশনে যোগ দেওয়া ৬০ জন কর্মকর্তাকে শুধু পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটাধিকারের কাজে সম্পৃক্ত রাখা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান প্রমুখ।