
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পিটুনিতে নিহত তিন বাংলাদেশি চোরাকারবারি ছিলেন বলে দাবি করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। ওই ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার তিনি এ দাবি করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ কথা জানানো হয়েছে।
ত্রিপুরায় তিন বাংলাদেশি নাগরিক নিহতের সাম্প্রতিক ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ১৫ অক্টোবর ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় তিন কিলোমিটার ভেতরে তিন বাংলাদেশি চোরাকারবারির মৃত্যুর ঘটনাটি ভারত সরকার অবগত।
রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের তিন দুষ্কৃতকারী আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের বিদ্যাবিল গ্রাম থেকে গবাদিপশু চুরির চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁরা স্থানীয় গ্রামবাসীর ওপর দা ও ছুরি নিয়ে হামলা চালান এবং একজনকে হত্যা করেন। অন্য গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে দুই চোরাকারবারিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তৃতীয়জন পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি জানান, তিনজনের মরদেহ বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ একটি মামলাও নথিভুক্ত করেছে।
রণধীর জয়সোয়াল আরও বলেন, এ ঘটনা আন্তসীমান্ত অপরাধ ও চোরাচালান রোধে আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন না করার রীতি বজায় রাখতে এবং প্রয়োজনীয় স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যে তিন বাংলাদেশিকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই জঘন্য কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য। এটা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন। ভারত সরকারকে এই ঘটনার বিষয়ে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।
গত বুধবার ত্রিপুরায় পিটিয়ে হত্যা করা তিন বাংলাদেশি হলেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পণ্ডিত মিয়া (৪০), সজল মিয়া (২৫) ও জুয়েল মিয়া (৩৫)। তাঁরা পেশায় দিনমজুর ছিলেন। পরদিন বিকেলে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ হস্তান্তর করে ভারত।