ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে মনগড়া, মিথ্যা ও অপতথ্য দিয়ে তৈরি সংবাদ প্রচার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
বুধবার এক বিবৃতিতে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সংগঠন দুটির নেতারা বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ছাত্র–জনতার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।
বিবৃতিতে বিএফইউজে ও ডিইউজের নেতারা বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, এই ইস্যুতে ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে মনগড়া ও অপতথ্য দিয়ে একের পর এক মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে ভারতের বক্তব্য ও এর পরিপ্রেক্ষিতে সে দেশের উগ্র জঙ্গিদের দ্বারা আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের পতাকা ছিঁড়ে ফেলা, কলকাতা ও মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের সামনে উগ্রবাদী সংগঠনগুলো যুদ্ধংদেহী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার ছড়ানোর কারণেই ফেনীর পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরে, সিলেটের দিকে আসামে ভারতীয় সীমানা থেকে বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন উগ্র বক্তব্য ও স্লোগানসহ সারা ভারতেই বাংলাদেশবিরোধী ভূমিকায় নেমেছে সেখানকার উগ্রবাদীরা।’
বিভিন্ন ফ্যাক্ট চেকিং (তথ্য যাচাইকারী) প্রতিষ্ঠানের জরিপের তথ্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের ভুয়া খবর বিপজ্জনক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ নিয়েও দেশটির মূলধারার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম যাচাই-বাছাই না করেই বিভিন্ন ভুল খবর প্রকাশ করছে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘ভারত সরকারের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড এবং সেখানকার মিডিয়ার ভূমিকায় আমাদের মনে হয়েছে, তারা দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চায়। এতে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করানো সহজ হবে। এসব ঘটনার পেছনে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ইন্ধন আছে বলেও দৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয় বলে নেতারা বিশ্বাস করেন।
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা আরও বলেন, ‘আমরা আশা করব, বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি ভারতীয়রা শ্রদ্ধাশীল হবেন। একই সঙ্গে ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষ করে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে সঠিক সংবাদ প্রচার করবে। এটা উভয় দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’