
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এ ঘটনায় জড়িত সবার নাম প্রকাশ করা হবে।
আজ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এবং প্রকৃত অপরাধী ও মদদদাতাদের শনাক্ত করার জন্য এখনই সবকিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে যাঁরা এ ঘটনায় জড়িত, তাঁদের সবার নাম প্রকাশ করা হবে।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা–কর্মী ভালোভাবে না জেনে ফ্যাসিস্টের দোসর, সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের তাঁদের দলে স্থান দিচ্ছেন। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলের নেতাদের অনুরোধ করব, এসব ব্যক্তির বিষয়ে সচেতন হবেন। দলের ভেতরে ওত পেতে থাকা সুযোগসন্ধানী, সুবিধাবাদী ও খোলস পাল্টানো দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করবেন। এদের থেকে দূরে থাকবেন।’
ফ্যাসিস্টের দোসর, সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের বিষয়ে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা নিন। তাহলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে পুলিশ, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ), র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে। এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এবং প্রকৃত অপরাধী ও মদদদাতাদের শনাক্ত করার জন্য এখনই সবকিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ১০ দিনের মধ্যে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়া সম্ভব হবে। এ সময় সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অতি দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য এবং যাঁরা এর পেছনে জড়িত রয়েছেন, তাঁদের নাম–ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা জনসম্মুখে উন্মোচন করতে পারব।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এ কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে ফ্যাসিস্টের দোসর, দুষ্কৃতকারী ও সন্ত্রাসীরা অনবরত তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সে জন্য সবাইকে অনুরোধ করব, আমরা যেন এমন কোনো কাজ না করি যা আমাদের শত্রুপক্ষকে শক্তিশালী করবে এবং হাদি হত্যার বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
এ ছাড়া জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ২৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় র্যাব ঘটনাস্থল থেকে ৫-৬টি ককটেল, হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড ১২ ড্রাম, অন্যান্য কেমিক্যাল ৭ ড্রাম, ৩টি বই ও স্প্লিন্টার উদ্ধার করেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ ঘটনার মূল হোতা আলামিন পলাতক রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা রয়েছে। র্যাব গতকাল শনিবার নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে আলামিনের সহযোগী আহসান উল্লাহ ওরফে হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে।