
রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে মাহফুজা আক্তার নামের যে নারী চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার হয়েছে, ফোনে তাঁর খোঁজ নিতে বলেছিলেন এক বন্ধু। ওই বন্ধুর অনুরোধে পাশের কক্ষের সহপাঠী গিয়ে দেখেন, মাহফুজার কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে দরজা ভেঙে দেখা যায়, তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছেন।
২৫ বছর বয়সী মাহফুজা আক্তার দুই বছর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। কয়েক সহপাঠীর সঙ্গে খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ এলাকার একটি বাসায় থেকে এফসিপিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুর জেলায়। তাঁর পরিবার থাকে ঢাকার কদমতলীতে। তিন ভাইবোনের মধ্যে মেজ ছিলেন মাহফুজা।
শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের পর রোববার বিকেলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় মাহফুজার বাসার বাসিন্দা ও তাঁর সহপাঠী রুম্পা রানীর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর।
ঘটনা সম্পর্কে রুম্পা রানী বলেন, ‘মাহফুজার সঙ্গে তাঁর বন্ধুর ঝগড়া হয়। ওই ছেলের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ের কথা চলছিল। ছেলেটি আমাকে ফোন দিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে বলে জানায়। সে বলে, ঝগড়ার একপর্যায়ে মাহফুজা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার কথা বলেছে। আমাকে তার রুমে গিয়ে একটু খোঁজ নিতে বলেন।’
এ কথা শোনার পর রুম্পা বেরিয়ে যান। পাশে মাহফুজার কক্ষের দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন, ভেতর থেকে বন্ধ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পাচ্ছিলাম না। বাইরে থেকে তার ফোন বাজার শব্দ পাচ্ছিলাম। কিন্তু ফোন ধরছে না। পরে আশপাশের সবাইকে নিয়ে দরজা ভেঙে দেখি, সে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। পরে খবর দিলে পুলিশ এসে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।’
খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাবরিনা রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহফুজার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়ের আত্মহত্যার জন্য তাঁরা কাউকে সন্দেহ করছেন কি না, জানতে চেয়েছি। তাঁদের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’
মাহফুজার বাবা নূর আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মেয়ে খুব ঠান্ডা মেজাজের ছিল। এমন কোনো সমস্যা ছিল না, যে কারণে আত্মহত্যা করতে পারে।’