Thank you for trying Sticky AMP!!

২৫ বছরে হাজারের বেশি রিকশা চুরি করেছেন তিনি

ফারুক মুন্সি

মাদারীপুরের ফারুক মুন্সি। সেই ১৩ বছর বয়সে রিকশা চুরিতে নাম লেখান। যাত্রাবাড়ীর এক ব্যক্তির প্ররোচনায় রিকশা চুরি শুরু তাঁর। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ২৫টি বছর। এখন তাঁর বয়স ৩৮।

জীবনের বড় অংশই রিকশা চুরি করে কাটানো ফারুক মুন্সি চুরিতেই হাত পাকিয়েছেন। তাই তো অন্য পেশায় নিজেকে জড়ানোর কথা আর ভাবেননি। এখন চুরি তাঁর পেশাই নয়, নেশায়ও পরিণত হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত ৩০ নভেম্বর রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকা থেকে ফারুক মুন্সিকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলছে, জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ২৫ বছরে অন্তত ২০ হাজার রিকশা চুরি করেছেন তিনি।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তারা জানান, ফারুকের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি থানার মাইজ পাড়ায়। ১৩ বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যান। তখন মায়ের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন ফারুক ও তাঁর ছোট ভাই। মা ও ছোট ভাই তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় একটি টিনশেড ঘরে ভাড়া থাকেন তাঁরা।

কর্মকর্তারা আরও জানান, ছোটবেলায় গ্রাম থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় আসার পর পান্না নামের এক চোরের সঙ্গে পরিচয় হয় ফারুকের। পান্নার পরামর্শে তখন থেকেই তিনি রিকশা চুরি শুরু করেন। একটি রিকশা চুরি করলে পেতেন ১৫০ টাকা। একপর্যায়ে তিনি নিজেই চোর চক্র গড়ে তোলেন। দুই বছর আগে একবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন। অল্পদিন পরই আবার ছাড়া পান। চালকেরা রাস্তার পাশে রিকশা রেখে গেলেই দ্রুততম সময়ে তিনি তালা খুলে সেটি নিয়ে পালিয়ে যেতেন। তাঁর বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও কদমতলী থানায় তিনটি চুরির মামলা রয়েছে।

ডিবির ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ফারুক চুরিতে সিদ্ধহস্ত। একটি রিকশা চুরি করতে তিনি সময় নেন কয়েক মিনিট।

ডিবির ওয়ারী বিভাগের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ফারুক মূলত যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কদমতলী ও নারায়ণগঞ্জে চুরি করেন। শুরুতে একটি রিকশা চুরি করলে দেড় শ থেকে আড়াই শ টাকা পেতেন। এখন চুরির পর একটি রিকশা বিক্রি করেন কয়েক হাজার টাকায়। এক এলাকা থেকে চুরি করা রিকশা অন্য এলাকায় বিক্রি করেন তিনি। তাঁর প্রধান সহকারী এক কিশোর।

পুলিশ জানায়, চুরির পর রিকশা বিক্রি করে অর্থ চক্রের সদস্যরা ভাগ করে নেন। ফারুক নিজের ভাগের অর্থ দিয়ে নিয়মিত ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করেন। চুরি করে উপার্জনের প্রায় পুরোটাই মাদকের পেছনে চলে যায় তাঁর।