
'আমাদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আমাদের অন্তর্ভুক্ত না করে কীভাবে এই সনদে (জুলাই সনদ) স্বাক্ষর করবে তারা। আমাদের আগেও শান্তি ছিল না, এখনো নাই, ভবিষ্যতেও থাকবে না।'
আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কথা বলেন ইমরান মিয়া। তিনি নিজেকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভের পর সকালে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ ব্যানারে শতাধিক মানুষ সংসদ ভবন এলাকার ১২ নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন। একপর্যায়ে তাঁরা সংসদ ভবন এলাকার ১২ নম্বর গেট টপকে ভেতরে ঢোকেন। মঞ্চের সামনে অতিথিদের চেয়ারে বসে স্লোগান দিতে থাকেন।
বেলা ১১টার দিকে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অতিথিদের জন্য সাজিয়ে রাখা চেয়ারে তাঁরা বসে আছেন। অনুষ্ঠানমঞ্চ ও অতিথিদের জন্য রাখা এই চেয়ারের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আন্দোলনকারীদের দাবি, জুলাই আন্দোলনে তাঁদের অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসন বাস্তবায়ন করতে হবে।
নিজেকে জুলাই যোদ্ধা বলে পরিচয় দেন জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘এ জুলাই সনদ মানি না। এই সনদে জুলাই যোদ্ধাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। আমরা আন্দোলন করতে গিয়ে পা হারিয়েছি, হাত হারিয়েছি, চোখ হারিয়েছি। অথচ আমাদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি। আমাদের অনেকে হাসপাতালে এখনো চিকিৎসা নিচ্ছে। তাই আমাদের দাবি, অবিলম্বে জুলাই সনদের সংশোধন করতে হবে।’
যাঁদের রক্তের ওপর জুলাই অভ্যুত্থান, তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। ক্রাচে ভর দিয়ে আসা জিহাদ ইসলাম জানান, তিনি জুলাই যোদ্ধা। তিনি বলেন, 'আমাদের এত জোরাজুরি করে ঢুকতে হবে কেন। আমাদের কি ইনভাইট করা উচিত ছিল না? ১৫–২০ হাজার চেয়ার দিতে পারত না?'
জুলাই সনদের সংশোধন বা পরিবর্তন না হলে অবস্থান চালিয়ে যাবেন বলেন জিহাদ ইসলাম।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তাঁদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যাবেন না বলে জানিয়েছেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিনিধিরা এখানে আসছেন। তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের আলোচনা হবে। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।