ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ

ডিএনসিসির প্রশাসক এজাজের দুর্নীতি-ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তদন্তে নথিপত্র চেয়েছে দুদক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের তদন্তে প্রয়োজনীয় নথিপত্র চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান। চিঠি পেয়ে নথিপত্র পাঠাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন ডিএনসিসির কর্মকর্তারা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুদক।

আজ ঢাকা উত্তর সিটিকে দেওয়া দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রশাসক এজাজের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান (দলনেতা) ও উপসহকারী পরিচালক সুবিমল চাকমার (সদস্য) সমন্বয়ে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বিভিন্ন রেকর্ড ও তথ্য চেয়ে সেগুলো ৭ ডিসেম্বরের (রোববার) মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।

দুদক যেসব নথিপত্র চেয়েছে

মোহাম্মদ এজাজ ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রশাসক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর যেসব কার্যক্রম করেছেন, এ–সংক্রান্ত বেশ কিছু কার্যক্রমের নথিপত্র চেয়েছে দুদক কর্তৃপক্ষ। দুদকের চাওয়া এসব তথ্যে আটটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গাবতলী পশুর হাটের ইজারা দেওয়া–সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র। পাশাপাশি ইজারা দেওয়ায় নিয়মের ব্যত্যয় নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন। ডিএনসিসি ই-রিকশা প্রকল্পের রেকর্ডপত্র (নীতিমালা, অর্থ বরাদ্দ, দরপত্র প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় রেকর্ডপত্র এবং প্রদানকৃত ই-রিকশা তালিকা)। বনানীর বোরাক টাওয়ার–সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের রেকর্ডপত্র (মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসহ চুক্তিপত্র সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র)। বনানী কাঁচাবাজারের দোকান বরাদ্দ–সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র (সিটি করপোরেশনের দোকান বরাদ্দ আইন, নীতিমালা, বিধিবিধান ও বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের যাবতীয় তথ্য)। খিলগাঁওয়ের তালতলা সুপার মার্কেটে পার্কিংয়ের স্থানসহ অন্যান্য স্থানে দোকান নির্মাণ ও বরাদ্দ–সংক্রান্ত তথ্য।

এ ছাড়া মোহাম্মদ এজাজ প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণের পর উত্তর সিটিতে যেসব সভা ও বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেসব সভার কার্যবিবরণীসহ সিদ্ধান্ত এবং সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতির তথ্যাদি। এর সঙ্গে ভ্যান সার্ভিস (গৃহস্থালির বর্জ্য সংগ্রহের) প্রকল্পের দরপত্র ও যাবতীয় তথ্যাদিও চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে দুদক বলেছে, তথ্যগুলোর মধ্যে যেসব কাজে দরপত্রপ্রক্রিয়া হয়েছে, সেসব কাজের ক্ষেত্রে প্রাক্কলন, অর্থ বরাদ্দপত্র, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, ঠিকাদারের দেওয়া দর প্রস্তাব, দরপত্র উন্মুক্তের নথি, দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদন, নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড, কার্যাদেশ, চুক্তি, পরিমাপের বই, চূড়ান্ত বিল ভাউচার ও চেকের যাবতীয় তথ্য।

ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুদকের দেওয়া চিঠি তারা পেয়েছেন। দুদক যেসব তথ্য চেয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে ওই সব তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।