Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনার টিকাদানে বিশেষ কর্মসূচি

দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৭২ শতাংশ।

এবার করোনার টিকাদানে সারা দেশে চার দিনের বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যাঁরা এখনো টিকা পাননি, তাঁদের জন্য এ কর্মসূচি। ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে টিকাদান। এ সময় করোনা টিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে কোভিড–১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কমিটি বলেছে, মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনসাধারণকে উৎসাহিত করতে হবে, তিন ডোজ টিকা নিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, বদ্ধস্থানে সভা করা থেকে বিরত থাকতে হবে, সামাজিক অনুষ্ঠান ও সভায় মাস্ক পরতে হবে এবং বেসরকারি কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষার ব্যয় কমাতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। গত শনিবার সভা শেষে কমিটি এসব সুপারিশ করে।

গতকাল রোববার সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকাল আটটা থেকে গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত সারা দেশে ৪ হাজার ১৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৭২ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ মানুষ নমুনা পরীক্ষা করালে ১২ জনের শরীরেই করোনা শনাক্ত হচ্ছে। সংক্রমণের বিবেচনায় এ হার অনেক বেশি।

দেড় থেকে দুই সপ্তাহ ধরে দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণের হার পাঁচের নিচে থাকার পর বছরের এ সময় কেন আবার সংক্রমণ বাড়ছে, এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না জনস্বাস্থ্যবিদদের কাছ থেকে।

জনস্বাস্থ্যবিদদের একটি অংশ মনে করেন, করোনার উপসর্গের তীব্রতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসবে। করোনা অনেকটা মৌসুমি জ্বর বা ফ্লুর মতো হয়ে পড়বে। বছরের কোনো কোনো সময় বাড়বে বা কমবে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হিসাব অনুযায়ী, মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম। তবে জুন–জুলাইয়ে এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। অন্যদিকে ইনফ্লুয়েঞ্জা–বির প্রকোপ সারা বছর ধরে চলে।

আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিকার কার্যকারিতা কমে আসছে, নাকি স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলার মতো তথ্য–উপাত্ত নেই।

তবে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো বছরের কোন সময়ে করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে, তা বলার জন্য আরও কয়েক বছরের পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন আছে। সেই পর্যবেক্ষণের কাজ চলছে।’

বাংলাদেশ দাবি করে আসছে, করোনা মহামারি তারা সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। করোনার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চেয়েও এগিয়ে।

তারপরও গত পরশু রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ প্রথম ডোজ এবং ৯৪ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেননি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনার টিকা প্রয়োগ কমিটির সদস্যসচিব শামসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে টিকা আছে। আমরা বুস্টার ডোজ অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু এখনো যাঁরা প্রথম ডোজ নেননি এবং প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নেননি, তাঁদের জন্য দেশব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি হবে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত।’ ওই সময় বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ দেওয়াও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১১ অক্টোবর থেকে সারা দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনার টিকা দেওয়া হবে। সারা দেশে এই বয়সী শিশু আছে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ। এসব শিশু দুই ডোজ করে ফাইজারের টিকা পাবে। প্রথম ডোজ পাওয়ার ৮ সপ্তাহ বা ৫৬ দিন পর শিশুরা দ্বিতীয় ডোজ পাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৭৭ শতাংশ মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন জনসংখ্যার ৭১ শতাংশ। আর তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ২৬ শতাংশ মানুষ।