Thank you for trying Sticky AMP!!

পাপুল কুয়েতের দুই সাংসদকে ঘুষ দেন ১৫ কোটি টাকা

কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুল

কুয়েতে আটক বাংলাদেশের সাংসদ শহিদ ইসলাম (পাপুল) দেশটির দুই সাংসদকে ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা

ঘুষ দিয়েছেন। এই দুই সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে দেশটির সংসদীয় কমিটি।

আজ সোমবার কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউশনের দপ্তর ও তদন্ত সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে আরবী দৈনিক আল রাই ওআল কাবাস এ খবর জানিয়েছে।

কুয়েতে সাংসদ শহিদ ইসলামকে আটকের পর থেকেই তাঁর মদদদাতা হিসেবে স্থানীয় রাজনীতিবিদদের বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে। কুয়েতের সংসদ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এ নিয়ে সরব হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে দুই সাংসদের প্রাধিকার কেড়ে নেওয়ার সুপারিশ করল কুয়েতের একটি সংসদীয় কমিটি। শহিদ ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, সাদুন হামাদ আর ওতাইবি ও সালাহ আবদুলরেধা খুরশেদ এই দুই সাংসদকে তিনি সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার দিনার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা (এক দিনারে ২৭৫ টাকা ৫৩ পয়সা হিসাবে) ঘুষ দিয়েছেন।

এদিকে কুয়েতের সংসদের মঙ্গলবারের অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে শহিদ ইসলামের (পাপুল) কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ায় অভিযুক্ত দুই সাংসদের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি একটি সংসদীয় কমিটি সাদুন হামাদ আর ওতাইবি ও সালাহ আবদুলরেধা খুরশেদের প্রাধিকার কেড়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছে। কমিটির সুপারিশ সংসদের অনুমোদন পেলে শহিদ ইসলামের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তাদের কোন বাধা থাকবে না।

পাবলিক প্রসিকিউশনের বরাত দিয়ে কুয়েতের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সিরিয়ার এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে সাংসদ সাদুন হামাদ আর ওতাইবিকে নগদ ও চেকের মাধ্যমে দুই লাখ কুয়েতি দিনার বা পাঁচ কোটি ৫১ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। এর মধ্যে ওতাইবির কুয়েত সিটির দক্ষিণ সুরা এলাকার বাসায় নগদ ৫০ হাজার দিনার বা প্রায় এক কোটি ৩৮ লাখ টাকা দেন শহিদ ইসলাম। এ ছাড়া সিরিয়ার ওই মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে চেকের মাধ্যমে ওতাইবির কাছে কয়েক দফায় দেড় লাখ দিনার বা প্রায় চার কোটি ১৩ লাখ টাকা পৌঁছে দেন। বাংলাদেশের সাংসদ তদন্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন নির্বিঘ্নে তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিল পাওয়ার জন্য কুয়েতের সাংসদকে তিনি ঘুষ দিয়েছিলেন।

কুয়েতের সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতার কাজ করে আসছে শহিদ ইসলামের প্রতিষ্ঠান মারাফিয়া কুয়েতিয়া। ওই প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। কোনো অনুমোদন ছাড়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে শহিদ ইসলাম তিন লাখ ৭০ হাজার দিনার বা ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন সাংসদ সালাহ আবদুলরেধা খুরশেদকে। বেশ কয়েক ধাপে ওই ঘুষ কুয়েতি সাংসদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে শহিদ ইসলাম স্বীকার করেছেন অনুমতি ছাড়া কর্মী নেওয়ার পাশাপাশি কুয়েতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ পেতে বিভিন্নজন তাঁকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ওই লোকজনকে তিনি নগদ ও চেকের মাধ্যমে টাকা ধার দিতেন। কাউকে কাউকে দামী উপহার দিতেন।

আরও পড়ুন:
সাংসদ পাপুল কুয়েতের নাগরিক নন, বলছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কুয়েতে মানব পাচারে যুক্ত বাংলাদেশের সাংসদ
সাংসদ পাপুল এখন কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে