Thank you for trying Sticky AMP!!

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে আদালতে ৪ আসামি

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাবের এএসপি মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে সিনহা হত্যা মামলার এই চার আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তাঁরা স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন।

সিনহা মো. রাশেদ খান

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার চার আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন। এ জন্য বুধবার তাদের কক্সবাজার আদালতে নেওয়া হয়েছে।

এই চারজন হলেন টেকনাফ থানার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণ করা হচ্ছে। গত রোববার এই চার আসামিকে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাব।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে র‌্যাবের গাড়িতে করে এই চার আসামিকে আদালতে নেওয়া হয়। সোয়া ১১টার দিকে এসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুনকে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে একই আদালতে নেওয়া হয় অপর দুই আসামি কনস্টেবল সাফানুর করিম ও কামাল হোসেনকে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. খাইরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে সিনহা হত্যা মামলার এই চার আসামি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তাঁরা স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তাই তাঁদের আদালতে নেওয়া হয়েছে। এর আগে প্রথম দফায় তাঁদের সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।

গত ৩ জুলাই সিনহার সঙ্গে শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাসকিন কক্সবাজার যান ভ্রমণবিষয়ক ভিডিওচিত্র ধারণ করতে। গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত।

সিনহা হত্যা মামলা মোট আসামি ১৩ জন। এর আগে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওসি প্রদীপকে চার দফায় ১৫ দিন এবং লিয়াকত ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে তিন দফায় ১৪ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। লিয়াকত ও নন্দ দুলাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ওসি প্রদীপ জবানবন্দি দিতে রাজি হননি।

মামলা অপর ছয় আসামি এপিবিএনের তিনজন ও মারিশবুনিয়া গ্রামের তিন ব্যক্তি তিন দফার রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে ওসি প্রদীপসহ ৯ আসামি জেলা কারাগারে আছেন।

৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন বাদী হয়ে একই আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এপিবিএনের তিন সদস্য ও মারিশবুনিয়া গ্রামের তিন ব্যক্তিকে। ঘটনার সময় ৩১ জুলাই রাতে এপিবিএনের তিন সদস্য শামলাপুর তল্লাশি চৌকির দায়িত্বে ছিলেন। আর মারিশবুনিয়া গ্রামের তিন ব্যক্তি সিনহা হত্যা ঘটনায় টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলায় সাক্ষী ছিলেন।