ইউএনও ওয়াহিদার জ্ঞান ফিরেছে, কথা বলেছেন: চিকিৎসক
অস্ত্রোপচারের পর দুর্বৃত্তের হামলার শিকার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি কথাও বলেছেন। তাঁর মাথায় কমপক্ষে ৯টি আঘাতের ক্ষত দেখা গেছে।
আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া চিকিৎসক জাহেদ হোসেন প্রথম আলোকে এই তথ্য জানান।
অস্ত্রোপচারের সময় ওয়াহিদা খানমের মাথায় কমপক্ষে ৯টি আঘাতের ক্ষত দেখা গেছে। মাথার খুলির যে হাড়টি ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল, সেটি অস্ত্রোপচারের সময় বের করা হয়েছে। রাত দেড়টার দিকে তাঁর জ্ঞান ফেরে । তিনি কথাও বলেন। তাঁর শরীরের ডান পাশ এখনো অবশ। এটি ঠিক হতে সময় লাগতে পারে।নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক জাহেদ হোসেন
হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক জাহেদ হোসেন বলেন, অস্ত্রোপচারের সময় ওয়াহিদা খানমের মাথায় কমপক্ষে ৯টি আঘাতের ক্ষত দেখা গেছে। মাথার খুলির যে হাড়টি ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল, সেটি অস্ত্রোপচারের সময় বের করা হয়েছে। রাত দেড়টার দিকে তাঁর জ্ঞান ফেরে। তিনি কথাও বলেন। তাঁর শরীরের ডান পাশ এখনো অবশ। এটি ঠিক হতে সময় লাগতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ওয়াহিদা খানমের আড়াই ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার হয়। এই অস্ত্রোপচারে অংশ নেন ছয়জন চিকিৎসক। সঙ্গে ছিলেন একজন অবেদনবিদ।
নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে জানান, এখন তিনি পর্যবেক্ষণে আছেন।
Also Read: ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ আটক ২
গতকাল বেলা তিনটার কিছু পরে ওয়াহিদাকে নিউরোসায়েন্সেস হসপিটালে আনা হয়। তাঁর চিকিৎসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছে। হাসপাতালের পরিচালক দীন মোহাম্মদ জানান, ওয়াহিদার মাথার আঘাত অনেক জটিল ও গুরুতর।
হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ দুজনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ শুক্রবার ভোরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে।
আটক করা দুজন হলেন ঘোড়াঘাট উপজেলার জাহাঙ্গীর হোসেন (৪২) ও আসাদুল ইসলাম (৩৫)। জাহাঙ্গীর যুবলীগের নেতা।
হামলার ঘটনায় ইউএনওর ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় রাতে অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
বুধবার গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা ইউএনওর সরকারি বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীকে (৭০) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। আহত বাবা-মেয়েকে গতকাল সকালে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। ওয়াহিদার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ওয়াহিদা ৩১তম বিসিএসের কর্মকর্তা। তাঁর স্বামী মেসবাউল হোসেনও একই ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। মেসবাউল রংপুরের পীরগঞ্জের ইউএনও। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ওয়াহিদার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে।
যেভাবে ঘটনা
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা গভীর রাতে ইউএনওর বাসভবনের পশ্চিম প্রান্তের দেয়ালে মই লাগিয়ে দোতলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে ঢোকে। ওই ভেন্টিলেটরে থাই অ্যালুমিনিয়াম বলে পরিচিত স্লাইডিং কাচ ব্যবহার করা হয়েছে। এক পাশের কাচ সরিয়ে ভেতরে ঢোকে দুর্বৃত্তরা।
হামলার ধরন দেখে পুলিশের কর্মকর্তারা মনে করছেন, প্রথমে হামলা হয়েছে ইউএনওর ওপর। সেই শব্দ শুনে পাশের ঘর থেকে তাঁর বাবা এগিয়ে গেলে তাঁর ওপরও হামলা হয়।
Also Read: ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলায় দোষীদের বিচার দাবি
রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওয়াহিদার বাবা ওমর আলী প্রথম আলোকে বলেন, আনুমানিক ভোর সাড়ে চারটার দিকে নামাজ পড়তে উঠলে পাশের ঘর থেকে মেয়ের চিৎকার শুনতে পান। সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলে মুখোশ পরা এক দুর্বৃত্ত তাঁকে আটকিয়ে আলমারির চাবি চায়, না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপরই তাঁর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। এরপর আর কিছু মনে নেই।
আরও পড়ুন
-
যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটিতে চড়াও পুলিশ, হার্ভার্ডে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার
-
কুমিল্লার চার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের স্বজনেরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী
-
দক্ষিণ কোরিয়ার আদালতের তথ্য চুরি করল উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা
-
ছয় মাস ধরে নিখোঁজ যুবককে পাওয়া গেল মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে, পেটে কাটা দাগ
-
খালের বর্জ্যে পাওয়া খাট–লেপ-তোশক ও সোফা–কমোড নিয়ে প্রদর্শনী