রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেন শিক্ষার্থীরা

মঙ্গলবার সকাল থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবস্থান করতে দেখা যায়
প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফের বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পূর্বনির্ধারিত সময় আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটায় এ বৈঠক শুরু হয়। দীর্ঘ ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটের বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মো. আবু জাফর হোসেন এই ঘোষণা দেন।

বৈঠক শেষে মো. আবু জাফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৈঠকে রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য আবদুল লতিফ স্যার আমাদের জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানার বিষয়ে আমাদের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে দণ্ডিত হবেন। তবে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এই ধরনের অপরাধে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে যে আইন বা বিধি প্রয়োজন, সেটি আমাদের নেই। যে কারণে সেই আইন তৈরি করতে তিনি ২০ কার্যদিবস অর্থাৎ ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ২০ কার্যদিবসের আগেই এই আইনটি তৈরি হওয়ার কথা রয়েছে। আগে হলে আগেই তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে। এ ছাড়া তিনি বলেছেন, আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অপ্রত্যাশিত যেসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে, সেগুলোর সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে। এসব বিষয়ে কোনো তদন্ত বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না।’

বৈঠক শেষে মো. আবু জাফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৈঠকে রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য আবদুল লতিফ স্যার আমাদের জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানার বিষয়ে আমাদের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে দণ্ডিত হবেন।’

আবু জাফর বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের কথায় আমরা আশ্বস্ত হয়ে আমাদের পক্ষ থেকে আগামী ১৫ নভেম্বরের পর প্রতি তিন দিন পরপর সময় রেখে আমাদের পরীক্ষার সময়সূচি তৈরির প্রস্তাব করেছি। একই সঙ্গে পরীক্ষার রুটিন যাতে করে আগামী ২৮ নভেম্বর ছাড়িয়ে যায়, সেই প্রস্তাব করেছি। তিনি আমাদের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। যে কারণে আমরা আমাদের আন্দোলন আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করলাম। আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টায় উপাচার্যের আহ্বানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ইউজিসির তদন্ত দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।’

বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে একটি সমাধান এসেছে। শিক্ষার্থীরা তাঁদের আন্দোলন বন্ধ করবে বলে কথা দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে বৈঠকটি হওয়ার কথা থাকলেও এটি শাহজাদপুর মহিলা কলেজের একটি কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য আবদুল লতিফের সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিচালক অর্থ গোলাম সারোয়ার এবং শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলে আবু জাফর ছাড়াও পাপন, শামীম, সিরাত, আম্মার, সাদ ও আরেফিন মোট সাতজন ছিলেন।

চার শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে শুক্রবার রাত আটটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস বলেন, ‘রোববার বিকেলে আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝাতে এসেছিলাম। এর পর থেকে রেজিস্ট্রারসহ আমরা ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা অবরুদ্ধ হয়েছিলাম। দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থাকার পর রাত দুইটার দিকে আমরা মুক্ত হয়েছি।’