
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এক বন্দীকে মারধরের অভিযোগে জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) শফিকুল ইসলাম খানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে করা নালিশি মামলা তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বন্দীর স্ত্রী মামলার বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন কারাধ্যক্ষ দেওয়ান মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, উপকারাধ্যক্ষ মো. সাইমুর, সুবেদার এমদাদ হোসেন ও কারারক্ষী সবুজ দাশ।
মামলায় বন্দী শামীমের স্ত্রী পারভীন আক্তার বলেছেন, তাঁর স্বামী চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতালে ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ জুলাই কর্তব্যরত কারারক্ষীর কাছে খাবার চান শামীম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপকারাধ্যক্ষ সাইমুর বন্দী শামীমকে জোর করে হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে বের করে দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে যোগ দেন কারাগারের জেলারসহ অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। এ সময় শামীমকে মারধর করা হয় কারাগারের বারান্দায়। পরদিনই কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কুমিল্লা থেকে শামীম বিষয়টি তাঁর স্ত্রীকে জানান। পরে কিছুদিন আগে এক মামলায় হাজিরা দিতে চট্টগ্রামে আসেন। তখন শামীম বিস্তারিত তাঁর স্ত্রীকে জানান। পরে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করতে দেরি হয়।
মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই বিষয়ে মামলা করার আগে পারভীন আক্তার গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করার আবেদন করেন। কিন্তু আদালতের এখতিয়ার না থাকায় তাঁর আবেদনটি খারিজ করে দেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, হত্যা মামলায় ফটিকছড়ির বাসিন্দা শামীমকে ২০০৭ সালের ২৪ এপ্রিল ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। পরে আপিল করলে ২০১২ সালে সাজা কমিয়ে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন উচ্চ আদালত। হত্যা মামলায় ২০০৪ সাল থেকে কারাগারে আছেন শামীম। তাঁর বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজির অভিযোগে আরও ছয়টি মামলা বিচারাধীন।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ দেওয়ান তারিকুল ইসলাম বলেছেন, কারাগারে সাধারণ বন্দীদের জিম্মি করে অবৈধ সুবিধা নিতেন শামীম। তাঁকে কোনো মারধর করা হয়নি। মামলা যে কেউ করতে পারেন। তদন্তে আসল তথ্য উঠে আসবে।