ঝড়ে ভোলায় দেড়শ ঘর বিধ্বস্ত, ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
গতকাল বুধবার রাতে ঝড়ে ভোলার চরফ্যাশন ও লালমোহন উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়–ক্ষতি হয়েছে। দুটি উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় দেড় শতাধিক টিনের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে কয়েক শ গাছ।
লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ, পশ্চিম চর উমেদ ও লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ তিনটি ইউনিয়নের শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
অপরদিকে চরফ্যাশন উপজেলার নীলকমল, নুরাবাদ, আমিনাবাদ, আসলামপুর ও ওসমানগঞ্জের অর্ধ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, গতকাল বুধবার সারাদিন বৃষ্টি পড়েছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বেতুয়া স্লুইসগেট মেঘনা নদী থেকে ঝড়টি ওঠে। এটা অনেকটা টর্নেডোর মতো ছিল। পরে ঝড়টি দক্ষিণ পূর্ব দিকে ধেয়ে যায়। ঝড়ে ইউনিয়নের ফাতেমাবাদ, অন্যদাপ্রসাদ ও প্যায়ারীমোহন গ্রামের বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়, গাছপালা উপড়ে যায়।
চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, ঝড়ে তাঁর ইউনিয়নের প্রায় ২৫ টি ঘর-বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। টিনের ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গাছের ওপর ফেলেছে। কয়েকটি কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে। ইউনিয়নের দক্ষিণ পশ্চিম প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একদমই দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।
এদিকে রমাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মাষ্টার বলেছেন, তাঁর ইউনিয়নের এক নম্বর ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। দক্ষিণ রায়চাঁদ আবাসন প্রকল্পের ৭০ টি ঘরের ৫৫টির টিনের চাল উড়ে গেছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের ১৫টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
রমাগঞ্জের এক নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, বুধবার সারা দিন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। রাত পৌনে দশটার দিকে হঠাৎ ঝড় ওঠে। শোঁ শোঁ শব্দ করে মুহুর্তের মধ্যেই ঝড় তাঁর ঘর উড়িয়ে গাছের ডালে ওপর নিয়ে যায়।ঘরের ভেতর তখন তাঁর ছেলে মেয়ে ও স্ত্রী ছিলেন। চাল উড়িয়ে নেওয়ার সময় তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে বেহুঁশ হয়ে যান। তার স্ত্রী ও মেয়ে হাতে ব্যথা পান। সারা রাত তাঁরা খোলা আকাশের নিচে ছিলেন। সকালের দিকে স্থানীয় মেম্বার আলী আহমদ দেড় হাজার টাকা এবং এলাকার সমাজসেবক আনোয়ার হোসেন এক হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনি আর কোনো সরকারি সহায়তা পাননি।
পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ বলেন, ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম চর উমেদ, ইলিশাকান্দি, সৈনিকবাজার, রায়পুরাকান্দির ৩০টি ঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। পশ্চিম চর উমেদ দাখিল মাদরাসার একটি টিনের ঘর দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।
ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ওসমানগঞ্জ, আসলামপুর, আমিনাবাদ, নুরাবাদ ও নীলকমল ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি এবং ক্ষয়–ক্ষতির তালিকা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
-
স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
-
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ মে পর্যন্ত বন্ধ
-
আগামীকালও ঢাকাসহ ২৭ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়
-
সামান্য রদবদলে নতুন টেলিযোগাযোগ আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন
-
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় পালা বন্ধ হচ্ছে, শাখা ক্যাম্পাস হবে আলাদা প্রতিষ্ঠান