Thank you for trying Sticky AMP!!

মধ্যরাতে চবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, আহত ১৩

ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর পুলিশের অবস্থান। সোহরাওয়ার্দী হল মোড়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত। এর জেরে কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে আটকানোর পর আজ মঙ্গলবার মধ্যরাত ১২ টায় সংঘর্ষে জড়িয়েছেন উপপক্ষ বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) নেতা-কর্মীরা। সংঘর্ষে দুই উপপক্ষের অন্তত ১৩ কর্মী আহত হয়েছেন।

বিজয়ের নেতা-কর্মীদের দাবি, রাত ১২ টার দিকে বিনা উসকানিতে সিএফসির নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে এসে তাঁদের নেতা-কর্মীর ওপর হামলা করেন। পরে তাঁরা প্রতিহত করেছেন। অন্যদিকে সিএফসির নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, কয়েক দিন ধরে বিজয়ের নেতা-কর্মীরা ‘স্লেজিং’ করছেন। এ কারণে তাঁরা ‘রিপ্লাই’ দিয়েছেন।

ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

গত ১৩ জানুয়ারি দুপুরে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপসাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক শেখ নাজমুল ইসলাম ও প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবিতে তাঁদের মূল ফটকে আটকে দেন বিভিন্ন উপপক্ষের নেতা-কর্মীরা।

এরপর থেকে পরিস্থিতি থমথমে হতে থাকে। এর মধ্যে ১৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে বিজয়ের এক নেতার জন্মদিনে অনুষ্ঠানে ঢিল ছোড়েন বলে অভিযোগ ওঠে সিএফসির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সোহরাওয়ার্দী হলের মোড়ে এই জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছিল। পরে মঙ্গলবার সারাদিন বিজয়ের নেতা-কর্মীরা হলে ছিলেন।

ছাত্রলীগ সূত্র বলেছে, মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে বিজয়ের নেতা-কর্মীদের অনেকেই সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে ছিলেন। আর সিএফসির নেতা-কর্মীরা ছিলেন শাহ আমানত হলে। দুই উপপক্ষের কাছেই রামদা ও লাঠিসোঁটা ছিল। একপর্যায়ে দুই উপপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। রাত প্রায় ১ টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এতে সিএফসির অন্তত ৫ কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের একজন বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নেন। আর চারজন চিকিৎসা নেন একটি বেসরকারি হাসপাতালে। অন্যদিকে বিজয়ের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র সূত্র বলেছে, পাথরের আঘাত ও দায়ের কোপ থাকায় তিন কর্মীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সিএফসির নেতা রেজাউল হককে সভাপতি ও সিক্সটি নাইনের নেতা ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দ্রুত সময়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু প্রায় আড়াই বছরেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এ নিয়ে পদপ্রত্যাশীরা ক্ষুব্ধ।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দুই পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এই দুই পক্ষ আবার ১১টি উপপক্ষে বিভক্ত।

যা বলছেন তাঁরা

বিজয়ের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াছ প্রথম আলোকে বলেন, বিনা উসকানিতে তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। ২৫ জানুয়ারির মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন দুই নেতা। কিন্তু কমিটির কার্যক্রম বানচাল করতেই এ হামলা চালানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হককে ফোন করলে সিএফসির নেতা সুমন নাসিরের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। পরে সুমন নাসির প্রথম আলোকে বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবিতে তাঁরা (বিজয় উপপক্ষ) অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইছে। জন্মদিনের অছিলায় তাঁরা সারা রাত উৎপাত করেছে। আজও তাঁরা আমাদের নেতা-কর্মীদের গালাগাল করেছেন। এ কারণে আমাদের নেতা-কর্মীরা গিয়ে তাঁদের প্রতিহত করেছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঝামেলা এড়াতে প্রক্টরিয়াল বডি সজাগ রয়েছে।