
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে আবদুল করিম (১৯) নামের এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের নরিনা পূর্ব পাড়া গ্রাম থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
করিম নরিনা পূর্ব পাড়া গ্রামের আলহাজ হোসেনের ছেলে। তাঁর মা করুণা বেগম চতুর্থ দফা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নরিনা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী প্রার্থী। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য করিমের মা ও বাবাকে আটক করেছে পুলিশ।
করুণা বেগমের ভাষ্য, তাঁর মেজ ছেলে করিম দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত। গত মঙ্গলবার রাতে খাওয়ার পর নিজের ঘরে ঘুমাতে গিয়েছিলেন করিম। পরদিন ভোরে ডাকাডাকি করেও সাড়া না পাননি। পরে ছোট ছেলের ঘর থেকে উঁকি দিয়ে করিমের ঝুলন্ত মরদেহ দেখা যায়। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে লাশ নামিয়ে বাড়ির শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে মাটিচাপা দেন।
সেপটিক ট্যাংকে লাশ রাখার কারণ হিসেবে আলহাজ হোসেন বলেন, প্রায় দুই বছর আগে তাঁদের বড় ছেলের বউ চিঠি লিখে রেখে আত্মহত্যা করেছিল। ওই ঘটনা সামাল দিতে তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। এবার ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি জানাজানি হলে আবার আইনি ঝামেলা হবে, তাতে বর্তমান বসতভিটাও থাকবে না। তাই বুকে কষ্ট চাপা রেখে ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি গোপন করতেই মৃতদেহ ট্যাংকে মাটিচাপা দিয়েছিলেন। বিষয়টি যেন কেউ বুঝতে না পারে, সে জন্যই স্বাভাবিকভাবে স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন হোসেন।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি সহ্য করা তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই শুক্রবার সকালে স্থানীয় গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের কাছে তাঁরা ঘটনা প্রকাশ করেন।
গাড়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানামাত্র তিনি পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চত করে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ শুক্রবার রাতে প্রথম আলোকে জানান, লাশটি উদ্ধারের করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল পাঠানো হবে। ঘটনাটি তদন্তে ছেলেটির মা-বাবাকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশটির শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানান তিনি।