নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে একজন কৃষকের শরীর ‘অ্যাসিড’ মেরে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে কৃষকের পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ধানীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চিকিৎসকের ধারণা, ছুড়ে মারা দাহ্য পদার্থ অ্যাসিড হতে পারে।
ওই কৃষকের নাম খলিলুর রহমান (৫০)। তিনি ওই ধানীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আর গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম শরিফ মিয়া (৩৬)। তিনিও একই গ্রামের বাসিন্দা।
এলাকার কয়েকজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খলিলুর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী আবদুল হান্নান ও মিজান মিয়ার বিরোধ চলছিল। এসব বিষয় নিয়ে ওই দুই ব্যক্তি এবং তাঁদের লোকজনের বিরুদ্ধে গত শনিবার খলিলুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। খলিলুরের ভাষ্য, এর পর থেকে প্রতিপক্ষ তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে খলিলুর শৌচাগারে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হন। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর দুই হাত ধরে রেখে পিঠে ‘অ্যাসিড’ ঢেলে দেন। এতে তাঁর শরীরের পেছনের অংশ ঝলসে যায়। পরে তাঁর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে প্রতিপক্ষের লোকজন দৌড়ে পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তানজিরুল ইসলাম বলেন, খলিলুর রহমানের পিঠসহ শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পোড়ার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, তাঁর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে খলিলুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আবদুল হান্নান, মিজান মিয়া, রবিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, এমদাদুল হক, মহির উদ্দিন, শরিফ মিয়াসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও তিনজনকে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শরিফ মিয়া নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আবদুল হান্নান ও মিজান মিয়ার মুঠোফোন নম্বরে কল দেওয়া হলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে তাঁরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া আজ বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় শরিফ মিয়া নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।