দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে সমাবেশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ নগরের গাঙ্গীনারপাড় মোড়ের শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরে
দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে সমাবেশ।  বৃহস্পতিবার বিকেলে
 ময়মনসিংহ নগরের গাঙ্গীনারপাড় মোড়ের শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরে

দীপু চন্দ্র দাসের হত্যার বিচার দাবিতে ময়মনসিংহে সমাবেশ

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সারা দেশে ‘মব সহিংসতা’ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় নগরের গাঙ্গীনারপাড় মোড়ের শহীদ ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির ময়মনিসংহ জেলা শাখা এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশ গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও শ্রমিক নেতা আবদুর রাজ্জাক বলেন, দীপু চন্দ্র দাসকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, উল্লাস করে আগুন দেওয়া হয়েছে, এমন উগ্রবাদ দমন করতে হবে। এভাবে রাষ্ট্র চলতে পারে না। একটি গোষ্ঠী বিগত সরকার পতনের পর থেকেই ‘মব সন্ত্রাস’ করছে। কিন্তু রাষ্ট্র তাদের কিছুই করতে পারছে না। দীপু দাস হত্যাসহ দেশজুড়ে চলা মব সন্ত্রাসের দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘এ দেশে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। যে অবস্থা বিরাজ করছে কে, কীভাবে হত্যার শিকার হব, বলা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগে সরকার পতনের পর মব সন্ত্রাস চলছে। এ অবস্থায় প্রশাসন, সরকার কী দরকার, যেখানে মানুষ আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। বিশ্বের কাছে খারাপ বার্তা যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, দীপুকে যেভাবে হত্যার পর আগুন দেওয়া হলো, এর দায় কারখানা কর্তৃপক্ষের। তাঁরা কারখানা কর্তৃপক্ষের বিচার দাবি করছেন। কারণ, তারা সমস্যার সমাধান না করে উন্মত্ত জনতার হাতে দীপুকে তুলে দিল। হিংস্র মানুষ যারা হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একটা মানুষকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে দিল, এটা কোনো সভ্য দেশ? ইসলাম তো এমন শিক্ষা দেয়নি।

সমাবেশে কমিটির সদস্য তারিকুল ফেরদৌস বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বাংলাদেশ আমরা কল্পনা করেছিলাম, তা হয়নি। দীপু দাসের মতো শ্রমিককে মব করে হত্যা করা হয়েছে। অপশক্তি মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। তারা ছায়ানট, উদীচীসহ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। মব জাস্টিস করে দেশে বিশৃঙ্খলা করা হচ্ছে। এদের রুখে দিতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম, এই ধর্মকে পুঁজি করে কেউ যেন হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটাতে পারে, সে জন্য সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।’

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক কাজী ফরিদের সভাপতিত্বে ও গৌতম করের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দীক, কবি সরকার আজিজ, আরিফুল হাসান, জায়েদ হাসান ওয়ালিদ, জেনাস ভৌমিক প্রমুখ।