নওগাঁর মান্দায় ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর (১৪) সন্তানের পিতৃপরিচয় পাওয়া গেছে। ছয় মাস আগে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি, ধর্ষণের শিকার কিশোরী ও ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর ডিএনএ নমুনা ঢাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। ২৬ নভেম্বর ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন নওগাঁ পুলিশের সিআইডিতে পৌঁছায়। তাতে দেখা যায়, ওই সন্তান ও ধর্ষকের ডিএনএ–এর মিল রয়েছে।
ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ায় আজ রোববার দুপুরে নওগাঁর আদালত চত্বর থেকে অভিযুক্ত যুবককে (৩০) গ্রেপ্তার করে নওগাঁর সিআইডি পুলিশ। নওগাঁ সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক তোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তার হওয়া ওই যুবকের বাড়ি মান্দা উপজেলাতেই।
গত বছরের ২ জানুয়ারি ওই কিশোরীর বাবা মান্দা থানায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধর্ষণের ঘটনায় ওই যুবকের সম্পৃক্ততা পায়নি জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন। বাদী এ প্রতিবেদনে নারাজি আবেদন করলে আদালত সিআইডিকে ঘটনাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তোজাম্মেল হক জানান, ভুক্তভোগীর বর্ণনার ভিত্তিতে ছয় মাস আগে ওই যুবকসহ তিনজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। ২৬ নভেম্বর প্রাপ্ত ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায়, কিশোরীর নবজাতকের সঙ্গে ওই যুবকের ডিএনএর মিল রয়েছে।
সিআইডির ওই কর্মকর্তা বলেন, ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর আজ সিআইডি অফিসে ডাকা হয়। ডিএনএ প্রতিবেদনের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। পরে দুপুরে নওগাঁ আদালত চত্বর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই যুবক। পরে কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ করে পরিবার স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়, সে অন্তঃসত্ত্বা। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ওই কিশোরী অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেয়।
পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার জন্য অভিযুক্ত যুবককে প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ওই কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পেছনে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন এবং ওই কিশোরীকে বিয়ে করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। পরে গত বছরের ২ জানুয়ারি ওই কিশোরীর বাবা মান্দা থানায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।