Thank you for trying Sticky AMP!!

মুঠোফোনে মন্ত্রীর কণ্ঠ নকল করে পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে প্রতারণা

সিরাজগঞ্জ জেলার মানচিত্র

সিরাজগঞ্জে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কণ্ঠ নকল করে স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক যমুনা প্রবাহ সম্পাদকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে একটি চক্র। চক্রটির সদস্যরা নিজেদের মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে ১৯ হাজার টাকা।

ভুক্তভোগী ওই সম্পাদকের নাম মোস্তফা কামাল। প্রতারণার ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দৈনিক যমুনা প্রবাহের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল মজিদ সরকার বাদী হয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জানতে চাইলে মোস্তফা কামাল বলেন, গতকাল সকালে একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে তাঁর ব্যক্তিগত নম্বরে এক ব্যক্তি ফোন করেন। তিনি নিজেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির এপিএস পরিচয় দেন, নাম বলেন রাশেদ। তাঁকে বলেন, উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি ১৭ জনের একটি দল সিরাজগঞ্জ আসবেন। তাঁরা পাঁচ দিন সিরাজগঞ্জ জেলায় অবস্থান করবেন। তাঁদের থাকা-খাওয়ার জন্য ভিআইপি হোটেলের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রতারণার ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দৈনিক যমুনা প্রবাহের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল মজিদ সরকার বাদী হয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

ওই ব্যক্তি এরপর বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা বলবেন, আপনি কথা বলেন।’ এই বলে মুঠোফোনটি মন্ত্রীকে দিচ্ছেন বলে মোস্তফা কামালকে জানান। অপর এক ব্যক্তি তখন কথা বলেন, যাঁর কণ্ঠ হুবহু টিপু মুনশির সঙ্গে মিলে যায় বলে মোস্তফা কামাল দাবি করেন। ওই ব্যক্তি মোস্তফাকে বলেন, ‘রাশেদ যা বলেছে আপনি সেটি সমন্বয় করেন।’

এরপর মোস্তফা কামাল স্থানীয় একটি অভিজাত হোটেলে রুম ও রেস্তোরাঁ বুকিং দেন। পাঁচ দিনের জন্য হোটেলে থাকা-খাওয়াসহ মোট পাঁচলাখ টাকা বিলের বিষয়টি তিনি রাশেদকে মুঠোফোনে জানালে তিনি শহীদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মুঠোফোনের নম্বর দিয়ে সম্পাদক মোস্তফা কামালকে বলেন, এই ব্যক্তি অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিলটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করবেন।

এরপর শহীদুলকে ফোন করলে তিনি মোস্তফা কামালকে তাঁর ব্যাংক হিসাব নম্বর দিতে বলেন। ব্যাংক হিসাব নম্বর দিলে শহীদুল বলেন, যেহেতু এটি সরকারি বিল, যে কারণে এটি জমা করার আগে একটি ফি দিতে হয়। সে জন্য তাঁর মুঠোফোন নম্বরে নগদ হিসাব খোলা আছে উল্লেখ করে ১৯ হাজার টাকা সেখানে পাঠাতে বলেন।

বিষয়টি নিয়ে রাশেদের সঙ্গে কথা বলেন মোস্তফা। তিনিও একই কথা বললে শহীদুলের নগদ হিসাবে ১৯ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এরপর তাঁর ব্যাংক হিসাব নম্বরে কোনো টাকা জমা হয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে মোস্তফা বারবার রাশেদ ও শহীদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা জানান, দুই ঘণ্টার মধ্যে টাকা জমা হবে। কিন্তু সেটি আদৌ হয়নি। পরবর্তী সময়ে তাঁদের দেওয়া মুঠোফোনের নম্বরগুলোও বন্ধ পাওয়া গেছে।

মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে ব্যক্তি মন্ত্রী হিসেবে কথা বলেছিলেন, তাঁর কণ্ঠ হুবহু টিপু মুনশির সঙ্গে মিলে যায়। তাই সরল বিশ্বাসে টাকাগুলো দিয়েছিলাম।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, অভিনব কায়দায় সম্পাদক মোস্তফা কামালের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টির তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।