রাকসু নির্বাচনের আগের রাতে ক্যাম্পাসে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ অক্টোবর
রাকসু নির্বাচনের আগের রাতে ক্যাম্পাসে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ অক্টোবর

রাকসু নির্বাচন: ভোটের আগের রাতে গান–স্লোগানে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আগের রাতে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ‘রাকসু, রাকসু, রাকসু’ স্লোগান আর ঢোলের তালে তালে নানা সুরের গানে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা। উৎসবে মেতে থাকা এই শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে সংহতি জানিয়েছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।

বুধবার রাত ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা এ আসর বসান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান করছিলেন। নির্বাচনের আগের রাতে শিক্ষার্থীদের এ রকম উৎসবে বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছেন। কেউ দলবেঁধে ছবি তুলছেন।

রাত পৌনে ১০টার দিকে পরিবহন মার্কেটে গানের তালে তালে ঠোঁট মেলাচ্ছিলেন শিক্ষার্থী কাউছার আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সচরাচর নির্বাচনের আগের দিন থমথমে পরিবেশ থাকে, কিন্তু আজ আমাদের ঈদের মতো আনন্দ। আমরা বিশ্বাস করি, বিগত দিনে যে দাবিদাওয়াগুলো প্রশাসনের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিনিধিরা সেই দাবি তুলে ধরবেন।’

গানের আসরে অংশ নিয়ে রাকসু নির্বাচনে সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রার্থী কাজী শফিউল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর একটা নির্বাচন হচ্ছে। এ জন্য ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমাদের প্রথম পরিচয় শিক্ষার্থী। তারপর আমরা ভোটার, তারপর আমরা প্রার্থী। শিক্ষার্থী হিসেবেই আমরা এই উৎসবে এসেছি।’

রাত পোহালেই রাকসু নির্বাচন। আজ রাতে ক্যাম্পাসে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ অক্টোবর

শিক্ষার্থীদের এমন উৎসবকে চাঁদরাতের সঙ্গে তুলনা করেন ছাত্রদল-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ আমাদের চাঁদরাত। এখানে আমরা যে যে প্যানেলেরই হই না কেন, আমরা সবাই রাবিয়ান। নির্বাচনের আগে যেমন সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, নির্বাচনের পরেও সেটি থাকবে।’

এ ছাড়া পরিবহন মার্কেটের এই উৎসবমুখর পরিবেশে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের’ জিএস প্রার্থী ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা, সর্বজনীন শিক্ষার্থী পর্ষদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাসিন খান, আধিপত্যবিরোধী ঐক্য প্যানেলের জিএস প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মারসহ অনেকেই সংহতি জানিয়ে উৎসব উপভোগ করেন।
রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হবে রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন।

নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ ও নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন। রাকসু নির্বাচনে ১০টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। রাকসুর ২৩টি পদে ২৪৭ জন, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন, প্রতিটি হল সংসদের ১৫টি করে পদে ১৭টি হলে ৫৯৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন ভোটার ৪৩টি পদে ভোট দিতে সময় পাবেন ১০ মিনিট। অর্থাৎ একজন ভোটার একটি ভোট দিতে প্রায় ১৪ সেকেন্ড সময় পাবেন। রাকসুতে ভিপি পদে ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন ও এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।